গোটা বিশ্বের নানা জায়গায় হানা দিয়েছে করোনা। ছত্রাকার হয়ে যাচ্ছে সমস্ত জীবন। ডাক্তার, গবেষকরাও নিজেদের কাজে মগ্ন। কেউ রোগীকে সুস্থ করে তুলতে, কেউ করোনার বিরুদ্ধে বল্লম তৈরি করতে। কিন্তু এখনও একে কাবু করা যাচ্ছে না। গবেষণায় উঠে আসছে নিত্য নতুন তথ্য। সেখানেই বলা হয়েছে করোনা ভাইরাসের বিবর্তনের কাহিনি। কী করে আরও অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে, সেটাই উঠে এসেছে এই গবেষণায়।
আমেরিকার লস অ্যালামাস ন্যাশনাল লাইব্রেরির গবেষকদের এই বিস্তারিত রিপোর্ট সম্প্রতি সামনে এসেছে। সেখানেই তাঁরা বলছেন, যত সময় এগিয়েছে ততই করোনা নিজেকে বদলে নিয়েছে। চিনের উহানে যে ভাইরাসটি আক্রমণ করেছিল, সেটাই যখন ইউরোপে আসে বদলে যায় চরিত্র। এমনকি, আজও প্রতিনিয়ত এই বদল ঘটে চলেছে করোনার মধ্যে। ফলে ভাইরাসের প্রাথমিক চরিত্র, কোষীয় বৈশিষ্ট্য কী সেটা স্পষ্ট হচ্ছে না। আর হচ্ছে না বলেই গবেষণাতেও ব্যাঘাত ঘটছে।
বিজ্ঞানীরা করোনার জেনেটিক চরিত্রের দিকে নজর রাখতে বলছেন। করোনা মূলত আরএনএ ভাইরাস। আর এই ধরনের ভাইরাস ক্রমাগত মিউটেশন ঘটাতে থাকে। যার জন্য একে চট করে ধরা যায় না। তবে এক্ষেত্রে ব্যাপারটি আরও জটিল। অন্যান্য ক্ষেত্রে মিউটেশন হলেও আগের কিছু বৈশিষ্ট্য থেকে যায়। কার্যকারিতার খুব একটা তফাৎ হয় না। কিন্তু করোনা ভাইরাস অনবরত এই কাজটি চালিয়ে যাচ্ছে। যার জন্য গবেষণায় এত সমস্যা তৈরি হচ্ছে। আর করোনা ভাইরাসের কাজই হল নিজের স্পাইকের সাহায্যে আমাদের কোষের ভেতর ঢুকে জিনের মধ্যে চলে যায়। তারপর শুরু হয় তার আসল কাজ।
এখন যে কোনো প্রকারেই হোক, গবেষকদের লক্ষ্য মিউটেশন হবার আগেই ভাইরাসটিকে কুক্ষিগত করে ফেলা। বিশেষ করে করোনা ভাইরাসের স্পাইকের চরিত্র বিশ্লেষণ করতে হবে। সেজন্যই গোটা বিশ্বের বিজ্ঞানী-গবেষকরা-চিকিৎসকরা কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু আমেরিকার এই গবেষকদের বক্তব্য, যে হারে মিউটেশন ঘটাচ্ছে করোনা ভাইরাস, তাতে ভ্যাকসিন বের করার কাজটা কঠিন হয়ে পড়ছে। সেটাই হল আশঙ্কার বিষয়।