সীমান্তের দিকে এগিয়ে আসছে ট্যাঙ্ক, মিশাইল-সজ্জিত সেনাবাহিনী। স্নাইপার রাইফেলের দূরবীনে চোখ রেখে বসে আছে শিকারিরা। শুধু অপেক্ষা যুদ্ধের দামামা বাজার। এমনই সব দৃশ্য প্রায় সারাদিনই প্রদর্শিত হচ্ছে রাশিয়ার (Russia) জাতীয় টেলিভিশনে। না, এই সমরসজ্জা রাশিয়ার নয়, ন্যাটোর (NATO)।
ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাত এমনভাবেই চিত্রায়িত করছে মস্কো। ইউক্রেনের (Ukraine) রাজনৈতিক অস্থিরতাকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে ক্রেমলিন। বিশেষভাবে পূর্ব ইউক্রেনের রাশিয়া-অধিকৃত ক্রাইমিয়া সাম্প্রতিক সময়ে একাধিকবার সহিংসতার শিকার হয়েছে। বিক্ষোভ ছড়িয়েছে ইউক্রেন রাজধানী কিয়েভেও। আর সেই কারণেই ইউক্রেনের সংকটে হস্তক্ষেপ করছে রাশিয়া। এমনটাই দাবি করছেন রুশ কূটনীতিবিদরা।
কিন্তু সেটাই কিন ইউরোপিয় দ্বন্দ্বের একমাত্র কারণ? না, তেমনটা নয় একেবারেই। প্রথমত, ভৌগলিক অবস্থানের কারণেই ইউক্রেনের ওপর মূল নজর রয়েছে রাশিয়ার। দ্বিতীয়ত, ইউক্রেন যাতে কোনোদিনই ন্যাটোর সঙ্গে জোট বাঁধতে না পারে, সেটাই লক্ষ্য রাশিয়ার। তাতে সামরিক দিক থেকে লাভবান হবে রাশিয়াই। কেননা, ইউক্রেনে ন্যাটো ক্ষেপনাস্ত্র প্রতিস্থাপন না হলে, অনেকটাই নিশ্চিত হবে দক্ষিণ-পূর্ব রাশিয়ার নিরাপত্তা। ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার এই সামরিক আগ্রাসনকে যুক্তিসঙ্গত নয় বলেই দাবি করছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দিন দুয়েক আগে মার্কিন ও রুশ প্রদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হলেও, তা ফলপ্রসূ হয়নি। বেরিয়ে আসেনি কোনো সমাধানসূত্র।
অন্যদিকে ইউক্রেন সীমান্তে ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে যুদ্ধের সম্ভাবনা। সীমান্তবর্তী এলাকায় ক্রমশ ক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে রাশিয়া। সেইসঙ্গে ইউক্রেনের সরকার বিরোধী গেরিলা যোদ্ধাদেরও অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে সাহায্য করছে ক্রেমলিন। এমনই তথ্য দিচ্ছে বিশ্বের কূটনৈতিক মহল। পরিস্থিতি ঠেকাতে ইংল্যান্ড ও ন্যাটো ইতিমধ্যেই সেনা পাঠিয়েছে ইউক্রেনে। প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্রও। আর সেই সংঘাতের বাঁধতে যে খুব বেশি বাকি নেই, তাও একপ্রকার নিশ্চিত। ইতিমধ্যেই আমেরিকা, ব্রিটেনের মতো দেশগুলি কিয়েভের দূতাবাস থেকে সরিয়ে নিচ্ছে কূটনৈতিক ব্যক্তিত্বদের। ফলে যুদ্ধের আ আভাস বেশ স্পষ্টই। এই সংঘাত বাঁধলে তা যে শুধু পূর্ব ইউরোপের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে এমনটা নয়। তার প্রভাব পড়বে গোটা বিশ্বেই। আকাশ ছোঁবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ। এখন দেখার রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের আগে ইউক্রেন-রাশিয়ার সম্পর্ক শীতল হয় কিনা...
আরও পড়ুন
ইউক্রেনের গণকবর খুঁড়ে তুলছে স্তালিনের নৃশংসতার স্মৃতি
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
ইউক্রেন-রাশিয়া দ্বন্দ্বে বিভক্ত পৃথিবী, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইঙ্গিত?