মাঠজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য ছোটো ছোটো স্টল। সারাদিন মানুষেরর ভিড় লেগেই রয়েছে সেখানে। না, কোনো ব্যবহারিক সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে না এইসব স্টলে। বরং, দেখানো হচ্ছে ম্যাজিক। কোনো স্টলে দেখানো হচ্ছে ভেন্ট্রিলোক্যুইজম, কোথাও কনজিওরিং আবার কোনো কোনো স্টলে আয়োজন হয়েছে হাত-সাফাই, জাগলিং, পাপেট-ফায়ার, স্যান্ডআর্ট কিংবা হ্যান্ড-শ্যাডোগ্রাফির। আক্ষরিক অর্থেই যে-কারোর মনে হবে, বুঝি হঠাৎ করেই হাজির হয়েছেন হগওয়ার্টসে।
না, হগওয়ার্টস নয়। এই দৃশ্য কলকাতার (Kolkata)। ২০০৯ সাল থেকে, প্রতি বছরই কলকাতার বুকে এমন এক অবাক দুনিয়া নির্মাণ করে থাকে ভারতীয় ম্যাজিশিয়ানদের সংগঠন ‘ফিমা’ (FIMA)। এমনকি জন্মলগ্নে এটাই ছিল ভারতের প্রথম ম্যাজিক মেলা (Magic Fair)। এবারেও অন্যথা হচ্ছে না তার। শীতের কলকাতাকে ম্যাজিক্যাল করে তুলতে ফের প্রস্তুতি শুরু করে দিলেন ফিমার সদস্য ও ম্যাজিশিয়ানরা। এই আয়োজনের সঙ্গে সহযোগী মিডিয়া হিসাবে জুড়ে রয়েছে প্রহর-ও।
অপেক্ষা, আর মাত্র তিন মাসের। আগামী ডিসেম্বরের ১৫ তারিখেই মোহরকুঞ্জে উদ্বোধন হতে চলেছে এই ম্যাজিক-মেলার। চলবে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত। “বিগত দু’বছরে মহামারীতে প্রাণ হারিয়েছেন অসংখ্য মানুষ। তাঁদের কথা মাথায় রেখেই এবারে আমাদের মেলার থিম ‘ম্যাজিক ফর লাইফ’”, বলছিলেন ‘ফিমা’-র কর্ণধার এবং ম্যাজিক মেলার অন্যতম আয়োজক সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়। এই প্রসঙ্গে বলে রাখা দরকার, বিগত দু-বছর ধরে অন্যান্য নানান অলাভজনক সংস্থার মতোই মহামারীর সঙ্গে দাঁতে দাঁতে চেপে লড়াই করেছেন ফিমার সদস্যরাও। পাশে দাঁড়িয়েছেন বহু মানুষের। সেটাই এবার থিম হয়ে ফিরে আসছে মেলা-প্রাঙ্গণে।
আরও পড়ুন
ক্যানসারাক্রান্ত ম্যাজিশিয়ান, চিকিৎসার খরচ জোগাতে বিশেষ ম্যাজিক প্রদর্শনী সতীর্থদের
আরও পড়ুন
চলমান ট্রামেই জাদুর প্রদর্শনী, শীঘ্রই পথে নামবে ম্যাজিক ট্রাম
তবে শুধু ম্যাজিকের প্রদর্শনীই নয়, এই মেলার উদ্বোধনের রীতিটাও বেশ অদ্ভুত। “চোখ বেঁধে গাড়ি ও বাইক চালিয়ে আমাদের মেলার উদ্বোধন করেন ম্যাজিশিয়ানরা। মেলার প্রথম বছর থেকে এটাই চলে আসছে”, জানালেন সঞ্জয়বাবু। জানা গেল, সবমিলিয়ে প্রায় হাজারেরও বেশি ম্যাজিশিয়ান অংশ নিতে চলেছেন চার দিনের এই মেলায়। কলকাতা বা বাংলার ম্যাজিশিয়ান ছাড়াও, ভারতের অন্যান্য প্রান্ত থেকে ম্যাজিক দেখাতে হাজির হবেন অন্ততপক্ষে ছ-শোর বেশি ম্যাজিশিয়ান।
আরও পড়ুন
আশা-আশঙ্কায় ঘেরা ম্যাজিকের ভবিষ্যৎ, সরকারি ছাড়পত্র কি প্রাণের সঞ্চার করতে পারবে?
দর্শকদের কাছে যেমন স্টলে ঘুরে ঘুরে পছন্দের ম্যাজিক দেখার সুযোগ থাকবে, তেমনই প্রতিদিন সন্ধে ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত চলবে স্টেজ শো। উপস্থিত থাকবেন আন্তর্জাতিক খ্যাতি-সম্পন্ন ভারতীয় ম্যাজিশিয়ানরা। তাছাড়া ছোটোদের জন্য ম্যাজিক ওয়ার্কশপও আয়োজিত হবে প্রতিদিন। সবমিলিয়ে কয়েকদিনের জন্য কলকাতা যে হয়ে উঠবে জে.কে. রাউলিং-এর উপন্যাসের প্রেক্ষাপট। অবাক করা এই দৃশ্যের সাক্ষী হতে উত্তেজনায় ফুটছে তিলোত্তমা…
Powered by Froala Editor