অদ্ভুতদর্শন এই প্রাণীটির চেহারার সঙ্গে আমরা সবাই কমবেশি পরিচিত। এদের মাথার উপর দিকটা বেশ বড়ো এবং সেখানে চুলের কোনো চিহ্ন নেই। কপালের নীচ থেকে চিবুক পর্যন্ত ক্রমশ সরু হয়ে এসেছে। তার মধ্যেই বিলুপ্তপ্রায় নাকের দুপাশে দুটো বড়ো বড়ো চোখ। কিন্তু সেই চোখেও কোনো তারার অস্তিত্ব নেই। অদ্ভুত জ্বলজ্বলে চোখের দৃষ্টি যে কোনদিকে, তা সহজে বোঝা যায় না। ওরা ভিনগ্রহের প্রাণী। বুদ্ধিতে নাকি মানুষের চেয়েও বেশ কয়েক গুণ উন্নত। মানুষ তাদের নাম দিয়েছে এলিয়েন।
পৃথিবীর বাইরে অন্য কোনো গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব সম্পর্কে কোনো প্রমাণ পাননি বিজ্ঞানীরা। তবে এলিয়েনের অস্তিত্ব সম্পর্কে অনেকেই বেশ নিঃসংশয়। অনেকে তাঁদের দেখেছেন বলেও দাবি করেন। আর এই নিয়ে খাঁটি বিজ্ঞানবাদীদের সঙ্গে তৈরি হয় বিতর্ক। সেই বিতর্ককেই উস্কে দেয় কিছু মুদ্রা। হ্যাঁ, আকারে ও চেহারায় সেই ব্রোঞ্জের পাতগুলিকে মুদ্রা বলেই মনে হয়। আর সব মুদ্রাতেই যেমন বিভিন্ন ছবি আঁকা থাকে, এখানেও আছে। তবে সেই ছবি কোনো মানুষের বা পৃথিবীর কোনো পরিচিত বস্তুর নয়। এই মুদ্রায় যে ছবি আছে তা এলিয়েনের এবং তাদের আকাশযান ইউএফও-র।
বছর পাঁচেক আগে ইজিপ্টের এক দম্পতি তাঁদের পুরনো বাড়ি ভেঙে নতুন করে তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আর তার জন্যই শুরু হয় মাটি খোঁড়ার কাজ। এই সময়েই হঠাৎ মাটির নিচে পাওয়া গেল গোটা সাতেক ব্রোঞ্জের মুদ্রা। আর সেই মুদ্রা দেখে হতবাক সেই দম্পতিও। স্থানীয় সংবাদপত্রে সে-কথা প্রকাশ পেতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে পৃথিবীজুড়ে।
এলিয়েনদের অস্তিত্ব সম্পর্কে যাঁরা দীর্ঘদিন গবেষণারত, তাঁরা এই আবিষ্কার দেখে উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেন। মুদ্রায় খোদিত ছবি যে কোনো এলিয়েন এবং গোলাকার পিরিচের আকৃতির বস্তুটি যে তারই আকাশযান, সে-কথা জোর দিয়ে বলতে থাকেন তাঁরা। তবে অনেক গবেষক প্রথমেই বিষয়টা মানতে রাজি হননি। মুদ্রাগুলিকে প্রথমে তাঁরা পরিকল্পিত চাতুরি বলে উল্লেখ করেছিলেন। কিন্তু গবেষণার ফলে দেখা যায়, একেকটি মুদ্রার বয়স তিন হাজার বছরেরও বেশি। এবং তার মধ্যে স্পষ্ট ল্যাটিন হরফে লেখা, ভবিষ্যতে আবার ফিরে আসার সময় হবে।
মিশরের সুপ্রাচীন ইতিহাসের পরতে পরতে জড়িয়ে আছে নানা রহস্য। অনেক প্রাচীন পুঁথিতেও এলিয়েনদের বর্ণনা পাওয়া যায়। ভিনগ্রহ থেকে এইসব উন্নত প্রাণীদের সঙ্গে কিছু জীবজন্তু এসেছিল বলেও উল্লেখ আছে সেইসব পুঁথিতে। আর তারা নাকি শেষ পর্যন্ত পৃথিবীতেই থেকে যায়। শুধু এলিয়েনরা ফিরে যায় তাদের গ্রহে। তবে এলিয়েনদের চেহারার কোনো ছবি সেখানে পাওয়া যায় না। এমনকি এই সুপরিচিত ছবির উৎসও যে কোথায়, সেকথা স্পষ্টভাবে জানা যায় না কিছুই। তবে প্রায় তিন হাজার বছরের পুরনো মুদ্রায় এমন ছবি সত্যিই অবাক করে।
কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায় অনেক। কোন গ্রহ থেকে এসেছিল এই প্রাণীরা? ফিরেই বা গেল কেন? আর আবার ফিরে আসার সময়ই বা কবে আসবে? আজ কি আর ব্রহ্মাণ্ডের কোথাও এলিয়েনের কোনো অস্তিত্ব আছে? আর, সবচেয়ে ওপরে, জেগে থাকে অমোঘ সেই প্রশ্নই - আদৌ কি এলিয়েনের কোনো অস্তিত্ব আছে? না পুরোটাই মানুষের উর্বর কল্পনা? কোনো প্রশ্নেরই কোনো সদুত্তর নেই কারোর কাছে। তবে শেষ পর্যন্ত বিজ্ঞানই সমস্ত প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারে।