বাতাসে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ ভাঙতে চলেছে ৩.৩ মিলিয়ন বছরের রেকর্ড, আশঙ্কায় গবেষকরা

আজ থেকে কয়েক মিলিয়ন বছর আগের কথা, পৃথিবী তখনও শীতল হয়নি। গড় উষ্ণতা মোটামুটি আজকের থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। দুই মেরুতে বরফের স্তরও বেশ পাতলা। আর এই পরিবেশে বাতাসের কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণও তখন অনেক বেশি। তবে এসব এক ফেলে আসা সময়ের কথা। যে যুগকে বিজ্ঞানীরা বলেন প্লায়োসিন। তবে সেই সময়ের রেকর্ডকে ভাঙতে চলেছে আজকের দূষিত পৃথিবী। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যেই বাতাসে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বিগত ৩.৩ মিলিয়ন বছরের রেকর্ডকে হার মানাবে বলেই জানাচ্ছে বিজ্ঞানীদের গবেষণা।

সম্প্রতি নেচার সায়েন্টিফিক রিপোর্ট পত্রিকায় প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে সাউথঅ্যাম্পটন ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক আবারও আমাদের সতর্ক করে দিলেন বাতাসে বাড়তে থাকা কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ নিয়ে। দীর্ঘ লকডাউনের পরেও যে উর্ধ্বগতিতে তেমন কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। কিন্তু এই বাড়তে থাকা কার্বন-ডাই-অক্সাইড আমাদের ঠিক কতটা বিপদের মুখে দাঁড় করাতে পারে? ড. থমাস চাকের মতে, এই প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের ফিরে তাকাতে হবে ইতিহাসের দিকে। খুঁজে দেখতে হবে যখন বায়ুমণ্ডলে এই পরিমাণ কার্বন-ডাই-অক্সাইড উপস্থিত ছিল, তখন আমাদের পৃথিবীর চেহারাটা ঠিক কেমন ছিল? আর এই উত্তর পেতেই ফিরে যেতে হবে প্লায়োসিন যুগের দিকে।

তবে এখন প্রশ্ন হতে পারে, বাতাসে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ এতটা বৃদ্ধি পাওয়ার পরেও আমরা সেই পরিমাণ উষ্ণতার বৃদ্ধি অনুমান করতে পারছি না কেন? এই প্রশ্নের উত্তর ব্যাখ্যা করেছেন গবেষণাপত্রের আরেক লেখক অধ্যাপক গাভিন ফস্টার। তিনি জানাচ্ছেন, পরিবেশের অন্যান্য উপাদানের সঙ্গে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের সাম্যাবস্থা তৈরি হতে কিছুটা সময় লাগে। তাছাড়া আমাদের পরিবেশে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ এখনও স্থিতিশীল নয়। প্রতি মুহূর্তে সেই পরিমাণ একটু একটু করে বাড়তেই থাকছে। আর তাই ভৌত সাম্যাবস্থা তৈরি হতে কয়েক বছর সময় লেগে যাবে। কিন্তু একদিন না একদিন উষ্ণতাও সেই মাত্রায় পৌঁছবে। আর তখন মানুষের অস্তিত্ব শেষ হতে বেশি দেরি থাকবে না।

Powered by Froala Editor