বন্ধ হতে চলেছে গুজরাটের ১০৭ বছরের প্রাচীন ন্যারো গেজ রেল পরিষেবা, উদ্বিগ্ন গ্রামবাসীরা

মাত্র ৫ কামরার ছোট্ট লাল রঙের রেলগাড়ি, মিটারখানেক চওড়া লাইনের উপর দিয়ে ছুটে গিয়েছে এই লকডাউনের আগেও। সেই ১৯১৩ সালে ব্রিটিশ কোম্পানির হাত ধরে যাত্রা শুরু। তারপর শুধু ইতিহাস নয়, গুজরাটের আদিবাসী জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে ছোট লাইনের ট্রেন। গুজরাটের বিলিমোরা থেকে ওয়াঘাই পর্যন্ত ৬৩ কিলোমিটার রাস্তার একমাত্র যোগাযোগ ব্যবস্থা বলতে গেলে এই ছোট লাইনের ট্রেন। তবে আর হয়তো কোনোদিন দেখা যাবে না এই ট্রেন। সম্প্রতি রেল মন্ত্রকের তরফ থেকে তেমনই নির্দেশ পৌঁছেছে পশ্চিমরেলের কাছে।

পশ্চিমরেল বিভাগের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, তাঁদের অধীনস্থ ১১টি ছোট লাইনের মধ্যে বেশ কয়েকটিকে অলাভজনক বলে বাতিল করার প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন তাঁরা। আর সম্প্রতি রেল মন্ত্রকের তরফ থেকে সেই প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যেই রয়েছে ১০৭ বছরের পুরনো বিলিমোরা-ওয়াঘাই রেললাইন। তবে রেলের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতিমধ্যে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছেন আশেপাশের অঞ্চলের মানুষজন। জঙ্গলে ঢাকা গ্রামগুলিতে পাকা সড়ক পর্যন্ত নেই। ফলে পরিবহনের একমাত্র মাধ্যম এই ছোট লাইনের ট্রেন। রোজ অসংখ্য কৃষক তাঁদের ফসলের পসরা নিয়ে রওয়ানা হন বিলিমোরা বাজারের দিকে। আবার ওয়াঘাই থেকে বহু শ্রমিক যাতায়াত করেন এই পথ দিয়েই। এই রেললাইন বাতিল হলে শুধু ইতিহাস নয়, বিঘ্নিত হবে স্থানীয় মানুষের জীবনও।

লকডাউনের শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত বন্ধ পশ্চিমরেল বিভাগের পরিষেবা। কয়েকটি বড়ো লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হলেও ছোট লাইনের ট্রেন বন্ধই আছে। আর তার সঙ্গেই থমকে আছে স্থানীয় মানুষের জীবনও। তবে কি চিরকালের মতো সেই জীবন থমকে যেতে চলেছে? জানেন না কেউই। শুধু কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, এই লাইন যেন একেবারে বন্ধ করে দেওয়া না হয়। সেই আবেদনে কর্তৃপক্ষ সাড়া দেন কিনা, সেদিকেই তাকিয়ে আছেন অসংখ্য মানুষ।

Powered by Froala Editor