চারিদিকে সাদা বরফের চালচিত্র। তার মাঝখানেই দাঁড়িয়ে আছে একটি মেরু ভালুক। কিন্তু, তার মুখ থেকে যে ঝুলে আছে আরেকটি মেরু ভালুকের কাটা মাথা! সাদা বরফের ওপর রক্ত আর ছিন্ন ভিন্ন দেহাংশ, হাড় পড়ে আছে। মৃত ভালুকটি আকারে বেশ ছোটোই। তাহলে কি নিজেই নিজের সন্তানকে মেরে খেয়ে নিল?
আর্কটিক অঞ্চলে তোলা এমনই একটি ছবি সম্প্রতি ভাইরাল হল নেট দুনিয়ায়। মেরু ভালুকের নিজের সন্তানকে খেয়ে নেওয়ার ছবিটি দেখে শিউরে উঠছেন সকলে। কিন্তু এরকম স্বভাব তো ছিল না তাদের! বিশাল চেহারার এই প্রাণীটির বসবাস বরফে ঢাকা মেরু অঞ্চলেই। মূলত সামুদ্রিক সীল মাছ শিকার করেই এদের পেট ভরত। তাহলে আজ কেন এদের অভ্যাস বদলে গেল?
পরিবেশবিদ ও গবেষকরা এর জন্য দায়ী করেছেন মানুষকেই। যত দিন যাচ্ছে, পৃথিবীর উষ্ণতা বেড়ে যাচ্ছে। আর এই বৃদ্ধির জন্য মেরু অঞ্চলের বরফও দ্রুত গলে যাচ্ছে। ফলে গোটা বাস্তুতন্ত্রই বদলে যাচ্ছে। এতেই বিপদে পড়েছে মেরু ভালুকরা। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে উত্তর মেরুতে মানুষের কার্যকলাপ। প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলনের জন্য বেশ কিছু জায়গায় তাঁবু ফেলা হয়েছে। এছাড়াও রয়েছে শিকারির উপদ্রবও। একে বাসস্থানের সংকট, উষ্ণতা বৃদ্ধি, তার ওপর খাবার কমে যাওয়া— এত কারণ একসঙ্গে মেরু ভালুকদের স্বাভাবিক স্বভাবই বদলে দিয়েছে। তারা ক্রমশ আরও হিংস্র হয়ে পড়ছে। সাম্প্রতিক সময় দেখা যাচ্ছে, পুরুষ মেরু ভালুকরা খাবারের জন্য মেয়ে ভালুক আর সন্তানদের ওপর আক্রমণ করছে ও খেয়েও নিচ্ছে। কারণ, এরাই তো সহজ টার্গেট!
পরিবেশ দূষণ এবং মানুষের ক্রিয়াকলাপ কীভাবে একটা প্রাণীর স্বভাববৈশিষ্ট্য, খাদ্যাভ্যাস বদলে দিতে পারে, এই ঘটনা তার ‘উৎকৃষ্ট’ প্রমাণ। এমনভাবে চললে, অন্য প্রাণীদের ওপরেও এমন প্রভাব পড়বে, সেটাই বলছেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু কজন শুনবে সেই কথা, জানেন না কেউ…