মানুষের সাধারণ পর্যবেক্ষণে এতদিন এড়িয়ে গিয়েছিল তারা। এবার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে নির্ণীত হল চাঁদের শরীরে থাকা ক্ষতের সংখ্যা। আর সেই রিপোর্টই চাঞ্চল্য সৃষ্টি করল বিজ্ঞানীমহলে। চিনের পাঠানো লুনার অরবাইটারের সংগৃহীত তথ্যের বিশ্লেষণের মাধ্যমে জানা গেল আরও ১ লক্ষ ৯ হাজার নতুন গহ্বরের অস্তিত্ব।
চিনের জিলিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূবিদ্যার গবেষক চেন ইয়াং যুক্ত ছিলেন এই গবেষণার সঙ্গে। তিনি জানান, নতুন আবিষ্কৃত গহ্বরগুলি মূলত চাঁদের নিম্ন ও মধ্য অক্ষাংশের অঞ্চলে খুঁজে পাওয়া গেছে। বিভিন্ন সময়ে উল্কার সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে তৈরি হয়েছে এই গহ্বরগুলি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গহ্বরগুলির ব্যাস ১ থেকে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। কাজেই এতদিন তা এড়িয়ে গিয়েছিল মানুষের সাধারণ পর্যবেক্ষণ থেকে। ধরে নেওয়া হয়েছিল তা চাঁদের ভূপৃষ্ঠের স্বাভাবিক গঠন।
তবে এর বাইরেও অনিয়মিত আকারের বৃহদায়তন গহ্বরেরও সন্ধান দিয়েছে চিনের লুনার অরবাইটার চেঞ্জ-১ এবং চেঞ্জ-২। যার ব্যাস ৫৫০ কিলোমিটার।
ইয়াং উল্লেখ করেন, এই গহ্বরগুলি অনেকটা ‘জীবাশ্ম’-এর মতোই। তাদের মধ্যেই সংরক্ষিত রয়েছে চাঁদের হারিয়ে যাওয়া ইতিহাস। গহ্বরগুলির কিছু কিছুর বয়স ৪০০ কোটি বছর পর্যন্ত। ফলে চাঁদের বিবর্তনের সম্পূর্ণ ইতিহাস সম্পর্কে সমস্ত তথ্যই পাওয়া সম্ভব হতে পারে সেখান থেকে।
তবে এখানেই ক্লান্ত না থেকে, এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অ্যালগোরিদমে আরও কিছু পরিবর্তন করছেন গবেষকরা। আগামী চেঞ্জ-৫ অভিযানে যা গহ্বর শনাক্তকরণে আরও নিখুঁতভাবে সাহায্য করবে বিজ্ঞানীদের। সেইসঙ্গে চাঁদ থেকে নিয়ে আসা নমুনার বিশ্লেষণেও বেশ কিছু তথ্যগত প্রমাণ মিলবে বলেই আশা করছেন তাঁরা।
তবে শুধু চাঁদই নয়। এই একই ধরণের অ্যালগোরিদমের ব্যবহারে সূর্যের অন্যান্য গ্রহ, বিশেষত মঙ্গলের ইতিহাস অন্বেষণের কথাও ভাবছেন জিলিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। তবে তার জন্য এখন প্রয়োজন মঙ্গলের বিশেষ ভূতাত্ত্বিক গঠন এবং পরিবেশের ব্যাপারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে সঠিকভাবে তৈরি করে নেওয়া। যা শুধু এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র...
আরও পড়ুন
চাঁদের সূর্যালোকিত অংশেও রয়েছে জল, যুগান্তকারী তথ্য নাসার
Powered by Froala Editor