চাঁদের বুকে হেঁটেছেন কখনও? ঘুরে দেখতে চান কেমন হয় সেই অভিজ্ঞতা? কথাটা শুনে হয়তো হেঁয়ালি বলেই মনে হতে পারে। তবে এবার বাস্তবেই হতে চলেছে এমনটা। চাঁদের বুকে হাঁটতে পারবেন আপনিও। অবশ্য তার জন্য স্পেশশিপে চড়ার প্রয়োজন নেই কোনো।
বিগত এক বছরে প্রযুক্তির জগতে একাধিকবার উঠে এসেছে চিনের (China) নাম। ল্যাবরেটরির মধ্যে কৃত্রিম সূর্য তৈরি করে রীতিমতো চমক লাগিয়েছিলেন চিনের বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি, প্রায় ১৭ মিনিট ধরে এই সূর্য ‘জ্বালিয়ে’ এক নতুন নজির গড়ল চিন। আর সেইসঙ্গেই তাঁরা ঘোষণা করলেন আর এক রোমহর্ষক আবিষ্কারের কথা। হ্যাঁ, কৃত্রিম সূর্যের পর এবার কৃত্রিম চন্দ্রও (Artificial Moon) তাঁদের হাতে। তা তৈরি হতে চলেছে পৃথিবীর বুকেই।
চিনা গবেষকদের তৈরি এই কৃত্রিম চন্দ্র মূলত একটি সিম্যুলেটর। কৃত্রিমভাবে নিয়ন্ত্রিত মাধ্যাকর্ষণ ক্ষেত্রই চন্দ্রপৃষ্ঠে হাঁটার অভিজ্ঞতা প্রদান করবে বিজ্ঞানীদের। ফলে, আগামীদিনে চন্দ্র অভিযানের আগে নভশ্চরদের অনায়াসেই প্রশিক্ষণ দেওয়া যাবে এই সিম্যুলেটরে। আর এই অভিনব আবিষ্কারের নেপথ্যে রয়েছে ‘চায়না ইনস্টিটিউট অফ মাইনিং অ্যান্ড টেকনোলজি’।
কিন্তু কীভাবে কাজ করবে এই চাঁদ? রাশিয়ার গবেষক আন্দ্রে জেইমের তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করেই তৈরি হচ্ছে এই কৃত্রিম চন্দ্র। ২০০০ সালে ম্যাগনেটিক ফিল্ডস ফর লেভিটেশনের জন্য নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন খ্যাতনামা রুশ পদার্থবিদ। তাঁর সেই তত্ত্বকেই কৃত্রিম চাঁদ তৈরিতে কাজে লাগিয়েছেন চৈনিক গবেষকরা। ঊর্ধ্বমুখী চৌম্বকক্ষেত্রের মাধ্যমে নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে পৃথিবীর সাধারণ মাধ্যাকর্ষণ ক্ষেত্রকে কমিয়ে এনেই তাঁরা। ফলে, কৃত্রিম চন্দ্রের বুকে যেকোনো পদার্থের ওজনই স্বাভাবিকের তুলনায় ছয় গুণ কম।
আরও পড়ুন
কীভাবে ধ্বংস হয় টেকটনিক প্লেট? উত্তর দিল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা
ইতিমধ্যেই চিনের জিয়াংশু প্রদেশের জুঝাউ শহরে নির্মিত হয়েছে এই কৃত্রিম চন্দ্রের ক্ষুদ্র সংস্করণ। ২ ফুটের একটি ছোট্ট ঘরকে ম্যাগনেটিক লেভিটেশনের সাহায্যে শূন্যে ভাসাতে সক্ষম হয়েছেন চিনের গবেষকরা। এবার তোরজোড় শুরু হয়ে গেলে সেই প্রকল্পকে পূর্ণতা দেওয়ার কাজ। আর বছর দেড়েকের মধ্যেই বাস্তবায়িত হবে সম্পূর্ণ কৃত্রিম চন্দ্র। বলাইবাহুল্য, পৃথিবীর বুকে এই ধরনের সিম্যুলেশন এই প্রথম। ২০৩০ সালের মধ্যেই চাঁদের বুকে মানুষ পাঠাতে চলেছে চিন। প্রথম চন্দ্রাভিযানে যাতে কোনোরকম ফাঁক না থাকে, সবরকমভাবেই তার পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে রাখছেন চিনের গবেষকরা।
আরও পড়ুন
কৃত্রিমভাবে তৈরি ‘ভারি ইলেকট্রন’, পদার্থবিদ্যার নতুন দিগন্তের সন্ধান দিলেন বঙ্গসন্তান
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
স্তন্যপায়ীদের মস্তিষ্কের সমান কাজ করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা : গুগল