গত ডিসেম্বর মাসে চিনের উহান প্রদেশ থেকে ছড়িয়ে পড়েছিল এক নতুন ভাইরাস। সার্স কোভ-২ বা করোনা ভাইরাস। যা ক্রমে সারা পৃথিবীতে মহামারীর আকার ধারণ করে। তাছাড়াও কিছুদিন আগে চিনে পাওয়া গিয়েছিল নতুন সোয়াইন ফ্লু’র ভাইরাস জি৪-ও। এবার সেই তালিকায় নাম লেখাল বিউবোনিক প্লেগ। সংক্রমণের অকুস্থল সেই চিনই। এখনো অবধি এই প্লেগে আক্রান্ত দু’জন। আতঙ্কে কাঁপছে শি শিংপিংয়ের দেশ।
জানা গেছে, চিনের বায়ান্নুরের একটি হাসপাতালে শনিবার দুই রোগীর শরীরে ধরা পরে বিউবোনিক প্লেগের জীবাণু। ওই দু’জনই চিনের মঙ্গোলিয়া প্রদেশের খেদভ অঞ্চলের বাসিন্দা। খবর চাউর হতেই তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেয় প্রশাসন। মঙ্গোলিয়া এবং বায়ান্নুরের বেশ কিছু অঞ্চলে চালু হয় লেভেল থ্রিয়ের সতর্কতা। ২০২০-র শেষ অবধি জারি থাকবে এই হাই অ্যালার্ট।
আক্রান্ত দুই ব্যক্তিই একই পরিবারের। এই দুই ভাই সম্প্রতি মারমেটের মাংস খেয়েছিলেন। চিকিৎসকদের ধারণা সেখান থেকেই সংক্রমণ ঘটে বিউবোনিক প্লেগের। তাঁদের সংস্পর্শে আসা ১৪৬ জনকে আইসোলেশনে রেখেছে চিনের প্রশাসন। তার সঙ্গেই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে মারমেটের মাংস খাওয়া এবং শিকারে।
উল্লেখ্য, চিনেরই ইউন্নান প্রদেশে তৃতীয় প্লেগ মহামারীর সূত্রপাত হয়েছিল। ১৮৫৫ সালে। জিয়াংফেং বংশের রাজা কুইংয়ের রাজত্বকালে। তারপর তা ক্রমশ ছড়িয়ে পড়েছিল এশিয়া, আমেরিকা এবং ইউরোপের বিভিন্ন প্রান্তে। মহামারীর ক্ষত বজায় ছিল ১৯৪৫ সালে বিশ্বযুদ্ধের সময় পর্যন্ত। ছড়িয়েছিল ভারতেও। ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতবর্ষে এই ভয়ঙ্কর রোগে প্রাণ গিয়েছিল প্রায় ১ কোটি ৩৫ লক্ষ মানুষের।
আরও পড়ুন
জন স্নো-র আবিষ্কার আর 'টাইফয়েড মেরি'র নির্বাসন - করোনার সঙ্গে যুদ্ধে আমাদের পাঠ দিচ্ছে ইতিহাস
বিউবোনিক প্লেগের জন্য দায়ী একটি ব্যাকটেরিয়া। যার বিজ্ঞানসম্মত নাম ইয়ারসিনিয়া পেস্টিস। সঠিক চিকিৎসা না হলে এর প্রভাবে মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যু হতে পারে আক্রান্তের। চিনের স্বাস্থ্যদপ্তর এবং প্রশাসন বিবৃতিতেও সম্প্রতি আশঙ্কা করা হয়েছে সচেতন না হলে মহামারীর আকার ধারণ করতে পারে এই রোগ। প্রায় এক শতক পরে আবার নতুন করে বিউবোনিক প্লেগের সংক্রমণে চিনের পাশাপাশি চিন্তিত সারা পৃথিবীর চিকিৎসকরাই।
আরও পড়ুন
করোনার পাশাপাশি হানা দিল ডেঙ্গুও, কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ইন্দোনেশিয়া
Powered by Froala Editor