এই শহরের যাবতীয় রেলওয়ে পরিষেবা সামলায় শিশুরাই

১১ কিলোমিটার দীর্ঘ রেললাইন পরিচালনা করছে খুদেরা। অবাক লাগলেও, এই মজার দৃশ্য দেখা যায় পূর্ব ইউরোপের দেশ হাঙ্গেরিতে বুদাপেস্টের পাহাড়ি এলাকা বুদা-হিলসে।

'জায়ারমেকভেসাট' নামের ছোট্ট একটি রেলস্টেশন। বাংলায় 'জায়ারমেকভেসাট' শব্দটির মানে শিশুদের রেলওয়ে। বুদাপেস্টের ১০-১৪ বছর বয়সী শিশুরা এই রেল পরিষেবার দায়িত্বে। টিকিট বিক্রি, স্টেশনে সিগন্যাল দেওয়া, স্টেশন মাস্টারের কাজ করা, টিকিট চেকিং করাসহ যাবতীয় কাজ তারা যত্ন সহকারে করে।

জায়ারমেকভেসাট রেললাইনটি মাত্র ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ। লাল, নীল, সাদা রঙের ট্রেনগুলো যখন পাহাড়ের বুক চিরে ঘুরে বেড়ায়, তখন দেখতে অসাধারণ লাগে। সব থেকে ভালো লাগে সেইসব বাচ্চাদের, যারা এ কাজের দায়িত্বে আছে।

এই ট্রেনে চড়ে বুদা-হিলসের সর্বোচ্চ শৃঙ্গে ওঠা যায়। সেখান থেকে গোটা বুদাপেস্ট শহর দেখা যায়। এই ট্রেনে চড়তে খরচা মাত্র ২-৩ মার্কিন ডলার। যাত্রাপথের সময় চল্লিশ থেকে পঁয়তাল্লিশ মিনিট।

স্টেশনে রয়েছে একটি জাদুঘর যেখানে রাখা রয়েছে পুরনো দিনের যন্ত্রপাতি। সেপ্টেম্বর থেকে এপ্রিলের সোমবারগুলোতে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে।

শীতকালে সকাল ন'টা থেকে বিকেল পাঁচটা এবং গ্রীষ্মকালে সকাল ন'টা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল অব্যাহত থাকে। এই স্টেশন সত্তর বছরের পুরনো। এটার নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ১৯৫০ সালে।

রেললাইনের কাজকর্ম সম্পাদনার জন্য মেধার ভিত্তিতে শিশুদের নিয়োগ করা হয় যাদেরকে ক্রমশ বিভিন্ন ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে দক্ষ করে তোলা হয়। অল্পবয়সেই ছেলে-মেয়েদের সংগঠিত করে তোলা, দায়িত্ববোধ, কমিউনিস্টদের নীতি শিক্ষা আর কায়িকশ্রমের শিক্ষা দেওয়াই ছিল এই রেললাইন পরিচালনার উদ্দেশ্য।

হাঙ্গেরি ঘুরতে যাওয়ার সুযোগ হলে জায়ারমেকভেসাটে কিন্তু ঘুরে আসা চাই। এখানে এলে অল্প বয়সের এই ছেলে-মেয়েরা যে কত দায়িত্ববান, তা নিজের চোখেই দেখতে পাবেন।