করোনা আবহে একেবারেই পাল্টে গেছে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা। নিও-নর্মাল সময়কে মানিয়ে নিয়েই, ছাত্রদের নিরাপত্তার কথা ভেবে অনলাইনে সরে এসেছে স্কুলের পঠন-পাঠন। আপাতত দৃষ্টিতে শহরাঞ্চল কিংবা শহরতলিতে ছাত্রদের খুব একটা অসুবিধা হচ্ছে না প্রতিদিনের ক্লাসে। কিন্তু প্রান্তিক অঞ্চলের ছাত্ররা?
বেশ কিছুদিন ধরেই টুকরো টুকরো ছবি আসছিল দেশের বিভিন্ন প্রান্তের। দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করেই কোথাও মঙ্গলসূত্র, কোথাও গবাদি পশু বিক্রি করে সন্তানদের পড়াশোনার সরঞ্জাম অর্থাৎ স্মার্টফোন জোগানের চেষ্টা করছিলেন দরিদ্র বাবা-মায়েরা। তবে গুজরাটের গির অঞ্চলের পঠন-পাঠনের চিত্র একেবারেই অন্যরকম। অর্থের ব্যবস্থা হলেও ছাত্রদের উপায় নেই পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার।
এর কারণ হিসাবে ফুটে উঠছে অঞ্চলের পরিকাঠামো। প্রান্তিক দুর্গম অঞ্চল হওয়ায় নেটওয়ার্ক তো দূরের কথা, মোবাইলে টাওয়ারও আসে না সেভাবে। লকডাউন ঘোষণার পর গুজরাট সরকার অনলাইনের এবং দূরদর্শনের মাধ্যমে ক্লাসের সম্প্রচারের ব্যবস্থা করেছিল। কিন্তু অনেকের বাড়িতেই নেই টেলিভিশনও। আর এই সংক্রমণের সময় গিরের মত দুর্গম অঞ্চলে সহজলভ্য নয় পাঠ্যপুস্তকও।
গির ফরেস্ট ডিভিশনের পূর্বের অঞ্চলে পিপলভা গ্রামের একমাত্র বিদ্যালয় পিপলভা গির প্রাইমারি স্কুল। অষ্টম শ্রেণী অবধি ক্লাস হত এই বিদ্যালয়েই। স্কুলের ছাত্রসংখ্যা ২৭৫। যার মধ্যে প্রায় ১৫ জন ছাত্রছাত্রীই আসে অভয়ারণ্যের দুর্গম স্থান থেকেই। শিক্ষাব্যবস্থা থেকে পুরোপুরি বিচ্ছন্ন হওয়ায় স্বাভাবিক জীবনও ব্যাহত গিরের এই সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের। ব্যাগ-বই নিয়ে স্কুলের যাওয়ার পরিবর্তে জীবিকা নির্বাহের জন্য, পরিবারের সঙ্গে গবাদি পশু চরাতে হচ্ছে তাদের। পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে তারই অপেক্ষায় করুণাবস্থার দিন গুনছে গিরের খুদে পড়ুয়ারা। তবে শুধু গির না, দেশের বিভিন্ন প্রান্তিক অঞ্চলের ছাত্রছাত্রীদেরই মুখোমুখি হতে হচ্ছে এমন পরিস্থিতির। সর্বসমক্ষে আসে না সব খবর। কিন্তু তাতে কি বাস্তব বদলায়!
আরও পড়ুন
অনলাইন ক্লাসে অপারগ, লকডাউনে পড়াশোনা ছেড়েছে দেশের ৪৩ লক্ষ প্রতিবন্ধী পড়ুয়া
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
বয়স মাত্র ১০৫, নতুন করে পড়াশুনা শুরু করেছেন কেরালার এই ‘তরুণী’