২২ বছরে এই প্রথম বৃদ্ধি পেল দেশের শিশু-অপুষ্টির হার, চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট

সারা পৃথিবীব্যাপী করোনা পরিস্থিতিতে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ভারতের অর্থনীতি। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দারিদ্র্য এবং অনাহার। আর এই পরিস্থিতিতে বিশেষভাবে সঙ্কটের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন শিশুরা। অনেকেরই দিনে দুবেলা খাবার জুটছে না। আর তার ফলে দেখা দিচ্ছে অপুষ্টি। সারা দেশের ২২টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের উপর সমীক্ষা চালিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে জাতীয় সংস্থা, ন্যাশানাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে। আর তাতেই দেখা গিয়েছে, গত ৫ বছরে ৫ বছর এবং তার কম বয়সী শিশুদের মধ্যে অপুষ্টির গ্রাফটা অনেকটাই বেড়েছে। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে শিশুমৃত্যুর ঘটনাও।

সারা দেশে ৪০ লক্ষ পরিবারের সামগ্রিক স্বাস্থ্য পরিকাঠামো এনএফএইচএস তার রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। আর তাতেই দেখা গিয়েছে, দেশে শিশুদের মধ্যে অপুষ্টির মাত্রাটা ২৫ শতাংশের বেশি। রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৯৮ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত প্রতিটি ৫ বছরের রিপোর্টে অপুষ্টির হার কমতে দেখা গিয়েছে। এই প্রথম সেই মাত্রাটা বাড়তে দেখা গেল। আর ২০১৫ সালের রিপোর্টে যেখানে এই অনুপাতটা শতকরা ২০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছিল, সেখানে হঠাৎ করে এই বৃদ্ধি সত্যিই আশঙ্কার।

গতবছর ওয়ার্ল্ডব্যাঙ্ক কর্তৃক প্রকাশিত রিপোর্টেও দেখা যায়, ভারতে শিশুদের মধ্যে অপুষ্টির মাত্রাটা ২১ শতাংশ ছুঁয়েছিল। আর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে আফগানিস্তানের পরেই স্থান ছিল ভারতের। এর জন্য সরকারিভাবে করোনা পরিস্থিতিকে দায়ী করা হলেও এনএফএইচএস-এর তরফ থেকে সেই দাবি উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই সংখ্যাটা হঠাৎ করে বেড়ে যায়নি। গত ৫ বছর ধরেই একটু একটু করে বেড়েছে। আর তার কারণ দেশের অর্থনীতির সার্বিক অবক্ষয়। নোটবন্দি থেকে জিএসটি-র ধাক্কায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পগুলি বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর এই ক্ষেত্রের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা লক্ষ লক্ষ মানুষের অর্থনৈতিক অচলাবস্থাই শিশুদের মধ্যে অপুষ্টির প্রধান কারণ।

সমীক্ষায় এও দাবি করা হয়েছে যে দেশে শিশুমৃত্যুর ৬০ শতাংশ ঘটনাই ঘটে অপুষ্টির কারণে। এছাড়াও অন্যান্য বয়সের মানুষের মধ্যেও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ক্রমশ কমে আসছে। এর জন্যও অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকেই দাবি করা হয়েছে। আর অবিলম্বে সরকারি পদক্ষেপ নেওয়া না হলে দেশের মানবসম্পদের যে বড়সড় সঙ্কট দেখা দেবে, সে-কথা বলাই বাহুল্য।

Powered by Froala Editor

Latest News See More