Powered by Froala Editor
বাংলার নবম গ্র্যান্ড মাস্টার মিত্রাভ, আর কোন কোন বাঙালি রয়েছেন এই তালিকায়?
১/১০
গত সপ্তাহ থেকেই সার্বিয়ার নোভি সাদে শুরু হয়েছিল মিক্স ২২০ দাবা চ্যাম্পিয়নশিপ। গতকাল সেই টুর্নামেন্টে সার্বিয়ার নিকোলা সেডলাককে হারিয়ে এক নতুন ইতিহাস তৈরি করলেন কলকাতার দাবাড়ু মিত্রাভ গুহ। এর আগে ভারতের জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ ও বাংলাদেশের শেখ রাসেল টুর্নামেন্টে দুটি জিএম নর্ম আদায় করে নিয়েছিলেন মিত্রাভ (Mitrava Guha)। গতকাল সার্বিয়ায় তৃতীয় জিএম নর্ম জেতার পরই গ্র্যান্ড মাস্টারের (Grand Master) মুকুট উঠল তাঁর মাথায়।
২/১০
মাত্র ২০ বছর বয়সে মিত্রাভ’র এই কৃতিত্ব উচ্ছ্বসিত গোটা বাংলার ক্রীড়ামহল। পশ্চিমবঙ্গের নবম দাবাড়ু হিসাবে গ্র্যান্ড মাস্টারের তকমা পেলেন তিনি। এর আগেও দাবার জগতে বাংলা থেকে উঠে এসেছে একাধিক তারকা। বা, বলা ভালো গ্র্যান্ড মাস্টার। মিত্রাভ’র কৃতিত্বের দিনে ফিরে দেখা যাক সেইসব কিংবদন্তিদের।
৩/১০
দিব্যেন্দু বড়ুয়া— ১৯৯১ সাল। বিশ্বনাথন আনন্দের পর দ্বিতীয় ভারতীয় হিসাবে গ্র্যান্ড মাস্টারের শিরোপা উঠেছিল তাঁর মাথাতেই। বাংলাদেশের নিয়াজ মুরশাদের পর দ্বিতীয় বাঙালি গ্র্যান্ড মাস্টারও তিনি। সব মিলিয়ে তিনটি জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপের অধিকারী তিনি। বর্তমানে তাঁর অ্যাকাডেমি থেকেই উঠে আসছে অসংখ্য তরুণ বাঙালি দাবাড়ু। সদ্য গ্র্যান্ড মাস্টারের তকমা পাওয়া মিত্রাভও তাঁর ছাত্র।
৪/১০
সূর্য শেখর গাঙ্গুলি— দিব্যেন্দু বড়ুয়ার প্রায় এক দশক পর দ্বিতীয় গ্র্যান্ড মাস্টার পেয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ। আর তার নেপথ্যে ছিলেন সূর্য শেখর। ২০০৩ সালে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ জেতার পরই গ্র্যান্ড মাস্টারের তকমা পান তিনি। তার আগেই জুটেছিল ইন্টারন্যাশনাল মাস্টারের শিরোপা। ২০০৩ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত টানা ৬ বছর জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন সূর্য শেখর। তাছাড়াও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় তাঁর ঝুলিতে রয়েছে ৪০টি সোনা, ২১টি রুপো ও ৬টি ব্রোঞ্জ পদক। ২০০৮, ২০১০, ২০১২ সালে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ‘টিম অফ সেকেন্ডস’-এ খেলে বিশ্বনাথন আনন্দের সহযোগিতাও করেছিলেন তিনি।
৫/১০
সন্দীপন চন্দ— সূর্য শেখরের গ্র্যান্ড মাস্টার আদায়ের মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই ওই একই বছরে গ্র্যান্ড মাস্টার হন সন্দীপন। ২০০৪, ২০০৬ ও ২০০৮ সালে দাবা অলিম্পিয়াডে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্বও করেন তিনি। ২০১৩-র বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে বিশ্বনাথন আনন্দের সেকেন্ড হিসাবে সহকারীর ভূমিকাও পালন করেছিলেন এই বঙ্গতনয়। ২০১৬ ও ’১৭ সালে জিতেছিলেন ওপেন ডাচ চ্যাম্পিয়নশিপও।
৬/১০
নীলোৎপল দাস— চতুর্থ গ্র্যান্ড মাস্টার পেতে সন্দীপনের পর আরও ৩ বছর অপেক্ষা করতে হয় পশ্চিমবাংলাকে। ২০০৬ সালে গ্র্যান্ড মাস্টার হন নীলোৎপল। তার আগে ১৯৯৯ সালে ১৭ বছর বয়সে ইন্টারন্যাশনাল মাস্টারের তকমা পেয়েছিলেন তিনি। বর্তমানে জাতীয় স্তরে ৮৩ নম্বর স্থান ধরে রেখেছেন এই বাঙালি তারকা।
৭/১০
দীপ সেনগুপ্ত— ২০১০ সালের ভারতের ২২তম তথা বাংলার পঞ্চম দাবাড়ু হিসাবে গ্র্যান্ড মাস্টার আদায় করেন দীপ। ২০০০ সালে দাবার যুব বিশ্বকাপ জিতে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন দীপ। ২০১৯ সালে ব্যাংকক ওপেনেও কাপ আনেন দীপ।
৮/১০
সপ্তর্ষি রায় চৌধুরী— চলতি শতকের প্রথম থেকেই আন্তর্জাতিক দাবার জগতে অত্যন্ত পরিচিত মুখ সপ্তর্ষি। ২০১৩ সালে গ্র্যান্ড মাস্টারের মুকুট ওঠে তাঁর মাথায়। ২০১৯ সালের পর সেইভাবে বড়ো কোনো ট্রফি তাঁর হাত ধরে না এলেও, বাংলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ দাবাড়ুদের তালিকাতে আজও জায়গা ধরে রেখেছেন সপ্তর্ষি।
৯/১০
দীপ্তায়ন ঘোষ— ২০১৬ সালে কনিষ্ঠতম বাঙালি দাবাড়ু হিসাবে গ্র্যান্ড মাস্টার হন দীপ্তায়ন। মাত্র ১৭ বছর বয়সে মাইলফলক স্পর্শ করে রীতিমতো নজির গড়েছিলেন তিনি। ২০১৩ ও ২০১৪ সালের অলিম্পিয়াডে সোনাজয়ী ভারতীয় দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন দীপ্তায়ন। ২০০৮ সালে জিতেছেন যুব এশিয়ান দাবা চ্যাম্পিয়নশিপও।
১০/১০
সপ্তর্ষি রায়— বছর তিনেক আগের কথা। সার্বিয়ার মিক্স ২২০ টুর্নামেন্টেই একটানা চারটি ম্যাচ জিতে নজির গড়েছিলেন সপ্তর্ষি। ২০১৮ সালের সেই টুর্নামেন্টেই গ্র্যান্ড মাস্টার পাওয়া হয়ে যায় তাঁর। মিত্রাভ’র গ্র্যান্ড মাস্টার-জয় যেন সপ্তর্ষির সেই কৃতিত্বেরই পুনরাবৃত্তি। ২০২০ সালে সেপ্টেম্বর মাসের পর আর কোনো আন্তর্জাতিক দাবার ম্যাচে দেখা যায়নি তাঁকে।