বয়স্কদের মুখে একটা কথা প্রায়শই শোনা যায়। ‘এই শতাব্দীতে যাই খাও তাতেই বিষ’। এই কথা যে খানিকটা হলেও সত্য, তাই প্রমাণ হয়ে গেল এবার। বিভিন্ন ফল পাকাতে ও ফসলের বৃদ্ধি দ্রুত করতে অনেক জায়গাতেই ব্যবহৃত হয় রাসায়নিক। কিন্তু মাছ ধরতে? এবার এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে আনলেন থানের পরিবেশকর্মীরা।
হ্যাঁ এখনও মাছ ধরতেও ব্যবহৃত হচ্ছে রাসায়নিক পদার্থ। থানের উলহাস নদীতে এই ঘটনা এখন দৈনন্দিনের রূপ নিয়েছে। নদী তীরবর্তী বাসিন্দারাই মূলত জড়িয়ে রয়েছেন এই কাজে। সম্প্রতি উলহাসনদী বাচাও কৃতি সমিতি বিষয়টি সামনে আনে। তৎপরতার সঙ্গেই তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে রাসায়নিক ব্যবহারে নিষেধ করে এই সংস্থা। তাতে কাজ না হওয়ায় এই ধরণের ক্রিয়াকলাপের জন্য থানায় অভিযোগ দায়ের করার কথাও জানান সংস্থার আধিকারিকেরা।
সংস্থার স্বেচ্ছাসেবক রবীন্দ্র লিঙ্গায়াত জানিয়েছেন, মাছ ধরতে ব্যবহৃত হচ্ছে জিলেটিনের মতো রাসায়নিক। ব্যবহার করা হচ্ছে শক ওয়েভও। তাতে অনেক বেশি মাছ ধরা পড়ায় লাভজনক হচ্ছে তাঁদের কাছে। কিন্তু রাসায়নিকের ব্যবহার ভয়ঙ্কর রকম প্রভাব ফেলছে সামুদ্রিক জীবনে। নষ্ট হচ্ছে বাস্তুতন্ত্র। মাছগুলি তাঁরা যখন বিক্রি করছেন বাজারে, সেখানেও ক্রেতাদের ওপরে এর প্রভাব পড়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি জানিয়েছে, উলহাস নদীতে এমনিতে জলের পরিমাণ অনেকটাই কম। কিন্তু লকডাউনে বাঁধের জল ছাড়ায় অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে জলস্তর। বেড়েছে মাছ ও অন্যান্য জলচর প্রাণীদের পরিমাণও। আর তার কারণেই প্রায় এক দশক পরে, উলহাসনগরের কোলি সম্প্রদায় আবার মাছ ধরা শুরু করেছে এই নদীতে। তবে অনেকেই তাঁরা ব্যবহার করছেন রাসায়নিক। যা উলটে ডেকে আনছে বিপদ।
আরও পড়ুন
ইউরোপে মোট আত্মহত্যার ১৩ শতাংশই পরিবেশ দূষণের প্রভাবে, জানাচ্ছে সমীক্ষা
গত বছর ১ মে, স্থানীয় বাসিন্দা এবং পরিবেশ কর্মীদের একটি দল নদী সংস্করণের কাজ শুরু করেছিল। দূষণ ও জলের চুরি আটকানোই ছিল তার প্রধান লক্ষ্য। নদীর তীরবর্তী এলাকায় নিয়মিত পরিষ্কারের কার্যক্রম, নদীর স্যানিটেশন এবং সংরক্ষণ সম্পর্কে মানুষকে সচেতনতা তৈরি করা এই বৃহত্তর কর্মসূচির অংশ ছিল। সেই সূত্রেই নদীর গুণগত মান পরীক্ষা করতে গিয়ে নজরে আসে বিষয়টি। মহারাষ্ট্র পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ডের আঞ্চলিক কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
পিকনিক স্পটে বটগাছের ঝুরি সংরক্ষণ, অভিনব উদ্যোগ বাংলার পরিবেশ কর্মীদের