“কর্তৃপক্ষ বলছে অধ্যাপক নেই বলে কোর্স বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু অধ্যাপক না থাকার দায় তো আমাদের নয়। আমরা অনেকেই ৭টি স্পেশাল পেপারের কথা মাথায় রেখে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিলাম। এখন হঠাৎ জানতে পারছি তার মধ্যে তিনটেই বাতিল।” বলছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা স্নাতকোত্তর স্তরের এক ছাত্রী। সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়, বাংলা স্নাতকোত্তর অন্তিম বর্ষের পড়ুয়াদের ঐচ্ছিক স্পেশাল পেপারের তালিকা থেকে লোকসংস্কৃতি, নাট্যচর্চা এবং তুলনামূলক সাহিত্যের তিনটি কোর্স বাতিল করা হল। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে কেবল চারটি স্পেশাল পেপারের মধ্যে বেছে নিতে পারবেন পড়ুয়ারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ অনেকেই। এক গবেষকের কথায়, “সমস্ত কোর্স পড়ানোর মতো শিক্ষক-শিক্ষিকা এখন নেই, একথা ঠিক। কিন্তু বিগত ১২ বছর ধরে আমাদের বিভাগে কোনো নতুন শিক্ষক নেওয়া হয়নি। এখন একটা কোর্স বন্ধ করে দেওয়া খুব সহজ। কিন্তু তা পুণরায় চালু করা তো সহজ নয়।” এমনকি শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়াতেও সমস্ত কোর্সের কথা মাথায় রাখা হয় না বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি। এতদিন এই তিনটি বিষয়ের কোনো স্থায়ী শিক্ষক ছিল না। অতিথি শিক্ষক দিয়ে সেই প্রক্রিয়া চলত। তবে অতিথি শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়াতেও এবার কড়াকড়ি আনতে চলেছে ইউজিসি। ইউজিসি-র নির্দেশিকা মেনে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ও জানিয়েছে, অতিথি শিক্ষকদের বার্ষিক ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। এর ফলে বেশ কিছু বিষয়ে প্রয়োজনীয় অতিথি শিক্ষক পাওয়া কঠিন হবে বলেই মনে করছেন অনেকে।
তবে লোকসাহিত্য এবং তুলনামূলক সাহিত্যের স্পেশাল কোর্স বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পড়ুয়াদের যথেষ্ট সমস্যা হবে বলেই মনে করছেন এক প্রাক্তনী। তাঁর কথায়, “বাকি বিষয়গুলি নিয়ে স্নাতক স্তরেই একটা পড়াশোনা থাকে। কিন্তু লোকসংস্কৃতি আর তুলনামূলক সাহিত্য স্নাতকোত্তর স্তরেই পড়ানো হয়। আর নেট পরীক্ষা এবং বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির পরীক্ষাতেও এই দুটি বিষয়ে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়। সেইসমস্ত পরীক্ষার প্রস্তুতির একটা বড়ো জায়গা ছিল এই স্পেশালপেপারগুলি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে অবশ্য দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করে অবিলম্বে কোর্সগুলি ফিরিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তারপরেও নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না অনেকেই।
আরও পড়ুন
কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে তৈরি ‘ইন্টারডিসিপ্লিনারি’ পাঠক্রম, ভারতে প্রথম
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
‘যোগ্যতাহীন অপদার্থ’, জাত নিয়ে আক্রমণের শিকার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা