সাম্প্রতিক সময়ে যত বাড়ছে ইন্টারনেটের ব্যবহার, ততই পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে হ্যাকিং। ব্যক্তিগত তথ্য হস্তগত করা কিংবা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাপিশ করে দেওয়ার ঘটনা এখন অতিপরিচিত সকলের কাছেই। তবে এখন নতুন পন্থা নিয়েছে হ্যাকাররা। তাদের হাতিয়ার এখন পর্নোগ্রাফিই। হ্যাঁ, এমনটাই জানাচ্ছেন বৈশ্বিক সাইবার সুরক্ষা সংস্থাগুলি। তোলাবাজির এই নতুন পর্বের বিষয়ে ইতিমধ্যেই সতর্ক করছেন তাঁরা।
সম্প্রতি একটি বহুজাতিক মার্কিন বেসরকারি সংস্থায় এভাবেই ‘অভিযান’ চালিয়েছে হ্যাকাররা। সংস্থাটির কর্ণধারের ব্যক্তিগত কম্পিটারের নিয়ন্ত্রণ কায়েম করে তারা। পর্ন সাইটে তাঁর অ্যাকাউন্ট-সহ, কম্পিউটারে ডাউনলোড করা একাধিক ভিডিওর স্ক্রিনশটও ডার্কনেটে প্রকাশ্য এনেছিল হ্যাকাররা। ব্ল্যাকমেলের মাধ্যমে আদায় করা হয় বড়ো অঙ্কের অর্থ।
আইটি সংস্থাটির পরিচালক প্রাথমিকভাবে অভিযোগ জানালেও পরে মুখে কুলুপ আঁটে গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার কারণে। জনসমক্ষে ঘটনাটির ব্যাপারে স্বীকারও করেনি সংস্থাটি। তবে বিশেষজ্ঞদের অনুমান, কয়েক মিলিয়ন ডলারের ‘মুক্তিপণ’ হাতিয়েছে হ্যাকাররা। এখানেই শেষ নয়, আরেকটি ঘটনায় অন্য এক সংস্থায় কর্মরত কর্মীদের পর্নসাইটের আইডি এবং পাসওয়ার্ডের দীর্ঘ তালিকা প্রকাশ করে তারা। দুটি পৃথক ঘটনার ক্ষেত্রেই একই হ্যাকার গ্রুপ জড়িত বলেই সন্দেহ করছেন সাইবার-সুরক্ষা সংস্থাগুলি। তবে গত সপ্তাহেই স্ক্রিনশটগুলি ডার্কওয়েবে তাদের ব্লগ থেকে সরিয়ে নিয়েছে হ্যাকাররা। অন্যদিকে আরও একটি হ্যাকার সংগঠন দাবি করেছে, কানাডা সরকার-কর্তৃক প্রবর্তিত কৃষিবিমার সমস্ত জালিয়াতির তথ্য রয়েছে তাদের কাছে।
হ্যাকিং-এর এমন পন্থা সম্পূর্ণ অভিনব। বর্তমান যুগে দাঁড়িয়ে নতুন মোড় নিচ্ছে হ্যাকিং-এর বিবর্তন, সেদিকটাই তুলে ধরছেন গোয়েন্দা অনুসন্ধানকারী ব্র্যাট ক্যালো। ব্র্যাট সতর্ক করেন, ইন্টারনেটে পর্ন সাইটগুলিতে বিজ্ঞাপন কিংবা কোনো লিঙ্কের মধ্যেই ম্যালওয়্যার লুকিয়ে রাখছে হ্যাকাররা। তাতে ক্লিক করার পরেই ডিভাইসের নিয়ন্ত্রণ চলে যাচ্ছে তাদের হাতে। তবে ব্যাঙ্কের তথ্য ছাড়াও কম্পিটারের হার্ডডিস্ক থেকে সমস্ত তথ্য কপি করে নেওয়ার এই প্রবণতা একেবারেই নতুন বলে জানাচ্ছেন ব্র্যাট।
আরও পড়ুন
নতুন ম্যালওয়্যার ছড়াল হ্যাকাররা, নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে আপনার ডিভাইসেরও!
২০১৯ সাল থেকেই বিক্ষিপ্তভাবে এই ধরণের ঘটনা ঘটতে দেখে গিয়েছিল বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। তবে বর্তমানে মূলত এই হ্যাকারদের লক্ষ্য বড়ো বড়ো ব্যবসায়ী এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাই। খুচরো অর্থ-আদায়ের থেকে বড়ো অঙ্কের মুক্তিপণেই তারা বেশি আগ্রহী। ২০২০ সালে সারা বিশ্বে এই ধরণের ব্ল্যাকমেলের মাধ্যমেই ১৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হস্তাগত করেছে হ্যাকাররা। এমনটাই দাবি সাইবার-সুরক্ষা গোয়েন্দাদের…
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
চুরির টাকায় দরিদ্রদের সাহায্য! হ্যাকার, নাকি হালের ‘রবিনহুড’?