লকডাউনে খাদ্যের জন্য হাহাকার তৈরি হয়েছে অনেক জায়গাতেই। যত দিন যাচ্ছে, খাদ্যাভাব বাড়ার স্মভাবনাও বাড়ছে। সেই কথা মাথায় রেখেই একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিল নবান্ন। রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা যোজনা-২ এর অন্তর্গত সমস্ত প্রাপকরা প্রতিমাসে ৫ কেজি করে চাল পাবেন। এমনটাই জানাল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। আগামী মে মাস থেকেই চালু হবে এই পরিষেবা।
এই পরিষেবার জন্যই এখন রাজ্যের দরকার বিপুল পরিমাণ চালের জোগান। সমস্যার সমাধানে তৈরি হল মোবাইল অ্যাপ ‘অন্নদাত্রী’। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই এই নামকরণ করেন। এই অ্যাপের মাধ্যমেই খুব তাড়াতাড়ি শুরু হবে জেলায় জেলায় চাল কেনার কাজ। সেই সঙ্গে মাথায় রাখা হয়েছে স্যোশাল ডিসট্যান্সিং বজায় রাখার ব্যাপারও। সরাসরি কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেই পাঠানো হবে ন্যায্য মূল্য।
এই নতুন বীমার সঙ্গে যোজনা-১ এর অন্তর্গতরাও সমপরিমাণ চাল পাবেন এবার থেকে। এতোদিন এই যোজনার প্রাপকরা ২ কেজি করে চাল এবং ৩ কেজি গম পেতেন বিনামূল্যে। করোনার পরিস্থিতির পর কেউ গম নিতে না চাইলে, তার জায়গায় দেওয়া হয়েছে সমপরিমাণ চাল। তবে এবার উভয় ক্ষেত্রেই ৫ কেজি করে চাল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল সরকার। এই যোজনা চালু থাকবে জুলাই মাস পর্যন্ত।
এখনো সরকারিভাবে জারি হয়নি আদেশনামা। তবে খাদ্য সরবরাহ বিভাগের সচিব পারভেজ আহমেদ সিদ্দিকি, আজ ভিডিও কনফারেন্সে সমস্ত জেলাশাসকদের এই বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন।
যে-সমস্ত এলাকায় বোরোধানের চাষ হয় না, কৃষকদের সম্মতি থাকলে, মজুত থাকা গোলা থেকেও কিনে নেওয়া হবে ধান। অ্যাপের মাধ্যমে বিক্রি করতে ইচ্ছুক চাষিকে জানাতে হবে তাঁর নাম, ঠিকানা এবং মোবাইল নম্বর। ব্যবস্থা করা হয়েছে ছোটো এবং বড়ো পণ্যবাহী গাড়িরও। উপযুক্ত স্থানে ওই গাড়ি পৌঁছে সংগ্রহ করবে চাল। গাড়িতেই থাকবে ওজন করার যন্ত্র। তবে শুধুমাত্র অ্যাপের মাধ্যমে নয়, পাশাপাশি টোল ফ্রি নম্বরও চালু করেছে খাদ্য দপ্তর, যাতে গ্রামীণ মানুষদের উপার্জনের রাস্তা তৈরি হয়।
এই পরিকল্পনার আওয়াভুক্ত করা হয়েছে যোজনা-১ এর অন্তর্গত ২ কোটি ৬৫ লক্ষ মানুষ এবং যোজনা-১ এর অন্তর্গত আরও ১ কোটি ৪৫ লক্ষ মানুষকে। এছাড়াও রেশন কার্ড এবং কুপনের সাহায্যে পরিষেবা পাবেন আরো অনেকে। সব মিলিয়ে প্রায় ১০ কোটি মানুষ উপকৃত হবেন। করোনা ভাইরাসের এই সংকটময় পরিস্থিতিতে এই পরিকল্পনা যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বড় পদক্ষেপ, তা অস্বীকার করার কোনো উপায়ই নেই।