কয়েকদিন আগেই, লকডাউনের নিয়মকানুন মেনে পুরনো ভাড়ায় বাস চালানো সম্ভব নয় বলে জানিয়েছিলেন বাসমালিকরা। গত মঙ্গলবার নবান্নে আলোচনার পর ভাড়ার বিষয়টি মালিকদের হাতে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেন পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। আর তার পরেরদিন নবান্নে যে নতুন ভাড়ার তালিকা পাঠানো হয়, তাতে দেখা যায় ভাড়া বেড়েছে প্রায় তিনগুণ। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই অবিমিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায় সাধারণ মানুষের মধ্যে। পরিবহন খাতে ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি কেউই মেনে নিতে পারেননি। আর অবশেষে শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে পরিবহনমন্ত্রী জানালেন, ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি এখনই অনুমোদন করছে না সরকার।
ভাড়া না বাড়ানোর ফলে হয়তো অনেক মালিক রাস্তায় বাস নামাতে চাইবেন না। তবে রাজ্য সরকার সেইসঙ্গে আরও কিছু প্রতিশ্রুতির কথা জানিয়েছে। বেসরকারি বাসের পরিবর্তে আরও বেশি সংখ্যায় সরকারি বাস চালানো হবে বলে ঘোষণা করেন পরিবহনমন্ত্রী, আর তাও অপরিবর্তিত ভাড়ায়। তাছাড়া রাস্তায় অ্যাপ ক্যাবের সংখ্যাও বাড়ানো হবে। বর্তমানে যেখানে মাত্র ২০০টি অ্যাপ ক্যাব চলছে, সেখানে সোমবার থেকে ১০০০ অ্যাপ ক্যাব চালানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মন্ত্রী। তাছাড়া বিশেষ ব্যবস্থা নিয়ে চালু করা হবে ট্রাম চলাচল। জলপথে পরিবহনের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ধাপে ধাপে হলুদ ও নীল-সাদা ট্যাক্সি চালু করা হবে। এইসব ক্ষেত্রে ভাড়া অপরিবর্তিত থাকবে বলেই জানিয়েছেন মন্ত্রী। একমাত্র অটো ভাড়ার বিষয়টি নিয়ে সঠিক কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছনো সম্ভব হয়নি। সরকার সেটি বিবেচনা করবে বলে জানানো হয়েছে।
রাজ্য জুড়ে লকডাউনের মধ্যেই ক্রমশ পরিবহন ব্যবস্থা স্বাভাবিক করে আনার চেষ্টা চলছে। মধ্যবিত্ত মানুষের জীবনে এ যেন খানিকটা স্বস্তির বাতাস। তবে এইসব নিয়ম মেনে পরিবহন ব্যবস্থা চালাতে অনেক ক্ষেত্রেই ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ মালিকদের। সরকার তাই বাস ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টিতে অনুমোদন দিয়েছিল। কিন্তু এই কঠিন পরিস্থিতিতে মানুষের উপর নতুন বোঝা চাপানোর সিদ্ধান্ত অবশেষে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এখন এই জটিলতার মধ্যে কতদিনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়, সেদিকেই তাকিয়ে আছেন সাধারণ মানুষ।