অভাবেও থামাননি পড়াশোনা, আইএএস অফিসার হওয়ার পথে ব্যাঙ্গালোরের বাস কন্ডাক্টর

পেশায় তিনি বাস কনডাক্টর। পেট চালাতে এটিই এখন তাঁর একমাত্র ভরসা। কিন্তু লক্ষ্য যে এখানেই থেমে নেই! স্বপ্ন, কেন্দ্রীয় সরকারের উচ্চপদে চাকরি করার। আইএএস অফিসার হবেন তিনি। সেই জন্য, চাকরি সামলেও দিনরাত ইউপিএসসি পরীক্ষার জন্য পড়েন ব্যাঙ্গালোরের মধু এন সি। আজ, স্বপ্নের দোরগোড়ায় প্রায় পৌঁছে গেছেন তিনি। কিন্তু লড়াই করা ছাড়েননি।

মা, বাবা, দাদা এবং বৌদি— এই নিয়েই সংসার ব্যাঙ্গালোরের ২৯ বছরের মধু-র। ছোট থেকেই তাঁর পথ ছিল লড়াইয়ের। পরিবারের মধ্যে তিনিই প্রথম স্কুলে যান। তাঁর মা-বাবা, বা তারও আগে কেউই বই ছোঁননি। পড়াশোনা করে দাঁড়ানোর স্বপ্ন ছিল মধু-র। কিন্তু বাধ সাধল সংসার। স্কুল পাশ করেই, ১৯ বছর বয়সে বাস কন্ডাক্টরির চাকরিতে ঢুকতে হয় তাঁকে। কিন্তু পড়াশোনা বন্ধ করেননি। ডিসটেন্স এডুকেশনের মাধ্যমে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে পড়া শেষ করেন তিনি।

তখন থেকেই মধু-র লক্ষ্য আইএএস হওয়া। তার জন্য পড়াশোনাও শুরু করেন তিনি। কিন্তু চাকরি যে ছাড়তে পারবেন না তিনি! আট ঘণ্টা ঘুরে ঘুরে কন্ডাক্টরেরর চাকরি করার পর, বাড়ি ফিরে পাঁচ ঘণ্টা সময় বের করে পড়তেন। তারই ফল পেলেন সম্প্রতি। ইউপিএসসি সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রিলিমিনারি, মেইনস পাশ করেছেন তিনি। এখন শুধু মার্চ মাসে ইন্টারভিউয়ের অপেক্ষা। সেটা টপকালেই, স্বপ্নকে ছুঁতে পারবেন মধু। দরজার একদম কাছে এসে যাতে হেরে না যেতে হয়, সেটাই চেষ্টা করে যাচ্ছেন তিনি।

কথায় বলে, চেষ্টা করলে এবং ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়। আইএএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে গেলে কতটা পড়াশোনা করতে হয়, সেটা জানেন অনেকেই। চাকরি সামলে, সংসার সামলে, নিজের পড়াটুকু করে গেছেন মধু এন সি। তারই ফল হাতে নাতে পেয়েছেন তিনি। এবার শুধু ইন্টারভিউ পাশ করার অপেক্ষায়। অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল আমাদের সবার তরফ থেকে।