পূর্বপুরুষের হাড় দিয়ে বানানো হত বাঁশি, ব্রোঞ্জযুগের অজানা প্রথার সন্ধান

আজ থেকে সাড়ে চার হাজার বছর আগে কেমন ছিল মানুষের জীবন? এই প্রশ্ন মনে জাগা অস্বাভাবিক নয়। তাই হরোপ্পা, মহেঞ্জোদারো, ব্যাবিলনের মত সভ্যতার ইতিহাস জানতে আজও উদগ্রীব হয়ে থাকে মানুষ। সম্প্রতি প্রত্নবিজ্ঞানীরা সামনে আনলেন ব্রোঞ্জযুগের এমনই অজানা চাঞ্চল্যকর তথ্য।

আনুমানিক ২৫০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ নাগাদ ব্রোঞ্জ যুগে পরিবারের সদস্যদের দেহাবশেষ স্মৃতিচিহ্ন হিসাবেই মানুষ তা সংগ্রহ করত। কখনও বা সেই দেহাবশেষ ব্যবহৃত হত দৈনন্দিন সামগ্রী হিসাবেও। ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানীর গবেষণায় উঠে এল এমনই তথ্য। যুক্তরাজ্যের একটি ভগ্নস্তূপ থেকে তাঁরা খুঁজে পান কিছু সমাধি। সেখানে দেখা যায় সমাধিস্থ ব্যক্তির সঙ্গেই সাজানো রয়েছে কিছু হাড়। যা অন্য কোনো ব্যক্তির।

বিজ্ঞানীরা কার্বন-ডেটিং এবং সিটি স্ক্যানের মাধ্যমে এই অস্থির বয়স গণনা করেন। এই গবেষণায় যুক্ত বিজ্ঞানী ডঃ থমাস বুথ মনে করছেন, মানুষকে সমাধিস্থ করার কয়েক বছরের মধ্যেই তার সমাধিস্থল খুঁড়ে তুলে আনা হত দেহাবশেষ, হাড়। ঘনিষ্ঠ কিংবা প্রিয়জনদের এই দেহাংশ পূর্বপুরুষের স্মৃতিচিহ্ন হিসাবেই সংরক্ষণ করত তারা। কখনো আবার সেই হাড় দিয়ে বানানো হত বাদ্যযন্ত্রও। তাদের মৃত্যুর পর সেইসব স্মৃতিচিহ্ন মৃত্যুর পরে ব্যবহারের জন্য তাদের সঙ্গেই সমাধিস্থ করা হয় আবার। উরুর হাড় ফেমার দিয়ে তৈরি একরকমের বাঁশি জাতীয় বাদ্যযন্ত্রের হদিশও পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

বুথ মনে করছেন এই প্রথা সেসময় চালু ছিল পূর্বসূরিদের কথা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। আজকের সময়ে দাঁড়িয়ে এমন ঘটনা আশেপাশে ঘটতে দেখাই যায় দৈবাৎ। কিন্তু আমাদের সভ্য সমাজ তাকে ‘অসামাজিক’, ‘ঘৃণ্য’ দৃষ্টিভঙ্গিতেই দেখে। কিন্তু আজ থেকে কয়েক হাজার বছর আগে থেকেই এই প্রথা বয়ে চলেছে আমাদের জিনে। তবে তখন যা ছিল অত্যন্ত স্বাভাবিক ঘটনা...

আরও পড়ুন
স্কটল্যান্ডের ১৩০০ বছরের প্রাচীন সমাধি থেকে উদ্ধার ১০টি কঙ্কাল

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
দক্ষিণ ভারতের প্রাচীন সমাধিক্ষেত্র থেকে উদ্ধার শিশুর কঙ্কাল