ছোট্ট একটা সাজানো গোছানো গ্রাম। কয়েকটা মাত্র কাঠের বাড়ি রয়েছে সেখানে। তাদের জুড়ে রেখেছে ছোটো বড়ো একাধিক সেতু। কোথাও আবার রয়েছে বেশ উঁচু থেকে নেমে স্লিপ খেয়ে আসার জন্য টানেল। ইনফিনিটি পুল, ক্রিসমাস কেবিন, ফুড কর্নার আরও কত কী। এ যেন ঠিক সব পেয়েছির দুনিয়া। কিন্তু বিষয় হল, এই এত কিছু আয়োজন মানুষের জন্য নয়। বরং, তা কাঠবেড়ালিদের।
হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন। কাঠবেড়ালিদের (Squirrels) জন্য নিজের বাড়ির বাগানেই এমন ‘অ্যামিউসমেন্ট পার্ক’ (Amusement Park) তৈরি করেছেন ইংল্যান্ডের গ্রিমসবির বাসিন্দা পল এভারিট। যত এগিয়ে চলেছে মানব সভ্যতা, তত ইট, কাঠ, পাথর আর কংক্রিটের আস্তরণে ঢেকে ফেলছে চারপাশের সবুজকে। ভারসাম্য হারাচ্ছে প্রকৃতি। আর অরণ্যনিধনের প্রত্যক্ষ শিকার হচ্ছে হচ্ছে কাঠবিড়ালি, পাখি, বিভিন্ন কীট পতঙ্গের মতো প্রাণীরা। ক্রমশ বাসস্থান হারাচ্ছে তারা। বলতে গেলে, পলের এই উদ্যোগ সেই বিরাট ক্ষতির সামান্য ক্ষতিপূরণ।
২০২০ সালের শুরুর দিকের কথা। তখন সবেমাত্র লকডাউন ঘোষিত হয়েছে। সেইসময় গৃহবন্দি হয়েই পল কাঠবেড়ালিদের জন্য এই গ্রাম তৈরি করার পরিকল্পনা করেন। প্রায় ১৮ মাসের দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর সম্প্রতি শেষ হয়েছে তাঁর সেই একক প্রকল্প। না, আলাদা করে আহ্বান জানাতে হয়নি কাউকে। শহরের বুকে একখণ্ড প্রকৃতির সন্ধান পেয়ে নিজেরাই হাজির হয়েছে খান বিশেক কাঠবিড়ালি। সেইসঙ্গে লেগে রয়েছে পাখিদের আনাগোনাও। পলের সঙ্গে দিব্যি বন্ধুত্বও গড়ে উঠেছে তাদের। পাখিদের ল্যান্ডিং-এর জন্য হেলিপ্যাডের কায়দায় আলাদা প্যাডও বানিয়েছেন পল। রয়েছে আহারাদির বন্দোবস্তও।
ব্রিটিশ নাগরিক হলেও, পলের জীবনের বেশিরভাগটাই কেটেছে কখনো সুইজারল্যান্ড, কখনো ফিনল্যান্ড কিংবা অন্য দেশে। সাইকেল নিয়েই তিনি ঘুরেছেন ইউরোপের বহু অঞ্চল। দিন কাটিয়েছেন অরণ্যে। ট্রেকিং, কায়াকিং— বাদ ছিল না কোনোটাই। মহামারীতে গৃহবন্দি হওয়ার পর সেই পরিবেশের ছোঁয়ার অভাব যেন তাড়া করে বেড়াচ্ছিল তাঁকে। তাই শেষ পর্যন্ত নিজেই সেই সমস্যার সমাধান বার করলেন ব্রিটিশ অভিযাত্রী। তবে তাতে অবলা প্রাণীরা উপকৃত হল, তা অস্বীকার করার জায়গা নেই…
আরও পড়ুন
রাস্তার প্রাণীদের আইনি সুরক্ষা দিতে লড়াই দিল্লির স্টার্টআপের
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
‘অস্ট্রিয়া জীবনানন্দাই’, জীবনানন্দ দাশের নামে নামকরণ হল প্রাগৈতিহাসিক প্রাণীর