জাদুঘরে মূলত জায়গা পায় প্রত্নতত্ত্বিক কিংবা ঐতিহাসিক সামগ্রীরা। সামরিক নিদর্শন, বিজ্ঞান থেকে শুরু করে প্রাচীন গ্রন্থ এমনকি মিম— সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে গড়ে উঠেছে বিষয়ভিত্তিক জাদুঘরও। কিন্তু শুধু মোবাইল ফোনের জন্য পৃথক কোনো মিউজিয়াম? এবার প্রথমবারের জন্য গড়ে উঠল তেমনটাই। ব্রিটিশ ব্যক্তির একক উদ্যোগেই তৈরি হল ডিজিটাল মোবাইল মিউজিয়াম (Mobile Phone Museum)।
প্রায় চার দশক আগের কথা। ১৯৮৪ সাল। বাজারে এসেছিল প্রথম বাণিজ্যিক বহনযোগ্য ফোন ডায়নাট্যাক ৮০০০এক্স। সেই ফোন অবশ্য পকেটে ঢুকত না। ওজনও ছিল প্রায় ২ কিলোগ্রাম। তারপর প্রযুক্তির দৌলতে বিপ্লব এসেছে মোবাইলের দুনিয়ায়। ক্রমশ আয়তন কমেছে হ্যান্ডসেটের। টাইপ থেকে শুরু করে ক্যামেরা— একের পর এক নতুন ফিচারও জুড়েছে তার সঙ্গে।
বিগত চল্লিশ বছরের এই বিবর্তনকেই মিউজিয়ামে ধরেছেন ব্রিটেনের ইন্ডাস্ট্রি অ্যানালিস্ট বেন উড (Ben Wood)। জায়গা পেয়েছে প্রায় ২১০০-এর বেশি মোবাইল ফোন। তবে বলতে গেলে এই জাদুঘরের গোড়াপত্তন হয়েছিল ২৫ বছর আগেই। ব্যক্তিগত সংগ্রহের জন্যই বিভিন্ন হ্যান্ডসেট জোগাড় করা শুরু করেছিলেন বেন। নতুন মোবাইল কেনা তো বটেই, বিভিন্ন খ্যাতনামা ব্যক্তিত্বর থেকেও মোবাইল ফোন সংগ্রহ করা শুরু করেছিলেন বেন। সেই তালিকায় ‘প্রাগৈতিহাসিক’ দৈত্যাকার ফোন ছাড়াও রয়েছে ম্যাট্রিক্স কিংবা বন্ডের সিনেমায় ব্যবহৃত হ্যান্ডসেট, বিভিন্ন ব্রিটিশ সঙ্গীতশিল্পী ও অভিনেতাদের ব্যবহৃত ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন।
তবে মিউজিয়াম তৈরি কোনো পরিকল্পনা ছিল না তখনও। সাম্প্রতিক সময়ে স্মার্টফোনের দৌরাত্ম্যে হারিয়ে যেতে বসেছে প্রাচীন হ্যান্ডসেটের বর্ণময় ইতিহাস। প্রযুক্তির এই বিবর্তনকে তরুণ প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে তাই ব্যক্তিগত সংগ্রহের এই ভাণ্ডারকে ডিজিটাল আর্কাইভে পরিণত করার সংকল্প করেন বেন। সেই ঘোষণা করার পরই এগিয়ে আসে মোবাইল কোম্পানি তথা টেলিকম সংস্থা ভোডাফোন। ডিজিটাল মিউজিয়াম তৈরির জন্য বেনকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে তারাই।
আরও পড়ুন
মিউজিয়ামে আজও সংরক্ষিত রয়েছে গ্যালিলিও-র আঙুল!
সম্প্রতি এই বিশেষ মিউজিয়াম উদ্বোধন উপলক্ষে লন্ডনে বিশেষ একদিনের প্রদর্শনীরও আয়োজন করেন বেন উড। আমন্ত্রিত হয়েছিলেন স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারা। তাছাড়াও সামনে থেকে মোবাইল ফোনের এই বিবর্তন দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন সাধারণ মানুষও। ডিজিটাল মিউজিয়াম তৈরির উদ্যোগ সফল হলে, আগামীদিনে এই ধরনের আরও প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে বলেই জানাচ্ছেন ব্রিটিশ উদ্যোক্তা। ততদিনে এই বিচিত্র সংগ্রহ দেখার আশ মেটাতে হবে অনলাইনেই…
আরও পড়ুন
এসডি বর্মণ এবং আরডি বর্মণের বাড়িতেই সঙ্গীত মিউজিয়াম, উদ্যোগ কলকাতা পুরসভার
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
ধ্বংস হতে পারে ৮ লক্ষ প্রত্নসামগ্রী, তালিবান-হানার আশঙ্কায় কাবুল মিউজিয়াম