কয়েকমাস আগেই দিল্লি বিধানসভা ভবনের (Delhi Assembly) নিচ থেকে উদ্ধার হয়েছিল একটি সুড়ঙ্গপথ। আর সেই সুড়ঙ্গপথ ধরে এবার আরও বড়ো এক ইতিহাসের সামনে এসে পড়লেন খননকারী দলের সদস্যরা। বিধানসভা ভবনের নিচেই লুকিয়ে ছিল ব্রিটিশ যুগের একটি ফাঁসিঘর (Execution Room)। পাশেই রয়েছে একটি গুপ্ত বিচারকক্ষও (Trial Room)। সম্প্রতি এই আবিষ্কারের কথা জানিয়েছেন দিল্লি বিধানসভার স্পিকার রামনিবাস গোয়েল। আপাতত এই ফাঁসিঘর এবং বিচারকক্ষের সম্বন্ধে একটি প্রাথমিক ধারণাও তৈরি করেছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। তবে বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য আরও গবেষণা করা হবে বলেও জানিয়েছেন শ্রী গোয়েল।
কলকাতা থেকে দিল্লিতে ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী স্থানান্তরিত হওয়ার পর ১৯১২ সালে তৈরি হয় দিল্লি বিধানসভার প্রাসাদটি। এই সময়েই সুড়ঙ্গ এবং ঘরদুটি তৈরি হয়েছে বলেই মনে করছেন গবেষকরা। প্রায় আকস্মিকভাবেই এই সুড়ঙ্গের সন্ধান পেয়েছিলেন বিধানসভার সাফাইকর্মীরা। আর সেই সুড়ঙ্গ দিয়ে কিছুটা যাওয়ার পরেই একটি দেয়ালের সন্ধান পাওয়া যায়। তবে সেই দেয়ালে টোকা দিতেই বোঝা যায়, দেয়ালের ওপারে কোনো ঘর রয়েছে। শেষ পর্যন্ত দেয়াল সরিয়ে সন্ধান পাওয়া যায় ঘরদুটির। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ১৯১৩ সাল থেকে ১৯২৬ সাল পর্যন্ত এখানে একাধিক বিপ্লবীর বিচার এবং ফাঁসি দেওয়া হয়েছে।
লালকেল্লায় বন্দি বিপ্লবীদের সুড়ঙ্গপথে নিয়ে আসা হত এই কক্ষে। তারপর বিচারের শেষে পাশের ঘরেই ফাঁসি দেওয়া হত তাঁদের। ফাঁসির মঞ্চের নানা উপাদান পাওয়া গিয়েছে একটি ঘরে। ১৯২৬ সালের পর আর এই ফাঁসিঘর ব্যবহার করা হয়নি বলেই অনুমান বিশেষজ্ঞদের। তবে আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য যোগাযোগ করা হয়েছে ভারতের প্রত্ন গবেষণা সংস্থার সঙ্গেও। খুব তাড়াতাড়ি তাঁরাও গবেষণার কাজ শুরু করবেন। গবেষণা শেষ হলে বিধানসভা ভবনের একটি অংশ পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন স্পিকার। মাত্র এক শতাব্দী আগের ইতিহাসও এতদিন লুকিয়ে ছিল মাটির নিচে অজানা অন্ধকারে। ব্রিটিশ যুগের এমন অনেক কাহিনিই হয়তো আজও রয়ে গিয়েছে গোপনে।
Powered by Froala Editor