গত বছর আগস্ট মাসে ভয়াবহ চেহারা নিয়েছিল আমাজনের দাবানল। ছাই হয়ে গিয়েছিল বিস্তীর্ণ বনভূমি। প্রাণ গিয়েছিল অসংখ্য বন্যপ্রাণী, কীটপতঙ্গের। ধ্বংস হয়েছিল বনজ সম্পদ, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল পরিবেশের ভারসাম্যও। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই আবারও বিধ্বংসী দাবানলে জ্বলে উঠল পৃথিবীর ফুসফুসে। গত বছরের থেকে এ-বছর আরও অবনতি হল পরিস্থিতির।
সম্প্রতি ব্রাজিলের ন্যাশনাল স্পেস এজেন্সির প্রকাশ করল রীতিমতো চাঞ্চল্যকর তথ্য। গত জুলাইয়ের নিরিখে এই বছর দাবানলের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ২৮ শতাংশ। এখনও অবধি এই দাবানলের শিকার হয়েছে ৬৮০৩টি অঞ্চল। তাও তা শুধুমাত্র ব্রাজিলেই।
ব্রাজিলের আমাজনএনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর অ্যানে অ্যালেনকার আগাম সতর্কতাও দিয়ে রেখেছেন। পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হতে চলেছে, রয়েছে প্রভূত সম্ভাবনা। অ্যালেনকার আশঙ্কা জানিয়েছেন আগস্টের মধ্যেও পরিস্থিতি আয়ত্তে আসবে না। বরং সেপ্টেম্বরে কয়েকগুণ বাড়বে দাবানলের পরিধি।
কিন্তু চিরহরিৎ অরণ্য হয়েও প্রতিবছর দাবানলের উত্তরোত্তর বৃদ্ধিই সত্যিই অবাক করছে। আমাজনে বছরে বৃষ্টির পরিমাণ থাকে ৩০০ সেমির আশেপাশে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, জুলাই থেকে অক্টোবর অবধি বৃষ্টিপাত খানিকটা কমই থাকে এই অঞ্চলে। ফলে বনভূমিতে অগ্নিকাণ্ড হওয়া অসম্ভব কিছুই নয়। তবে তার এই ভয়াবহ চেহারা নেওয়ার পিছনে হাত রয়েছে মানুষেরই।
আরও পড়ুন
ক্রমশ বাড়ছে করোনার দাপট, তার মধ্যেও সাও পাওলো খুলে দিল ব্রাজিল প্রশাসন
জঙ্গল কেটে ঝুমচাষ এবং খননকার্যে আগাগোড়াই সহমত পোষণ করেছেন ব্রাজিল প্রেসিডেন্ট জের বলসোনারো। পাশাপাশি জমি মাফিয়ারাও চালাত যদৃচ্ছ বৃক্ষচ্ছেদন। ফলে ধীরে ধীরে শুষ্কতা বাড়ছে ‘ফায়ারপ্রুফ’ আমাজনের। তবে বিগত কয়েক মাস ধরেই বলসোনারোর ওপর চাপ তৈরি করেছিল আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা। চাপের মুখে পড়েই জুলাই মাসে আমাজনে চাষাবাদের জন্য অগ্নিসংযোগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল ব্রাজিল প্রশাসন। তাতেও রক্ষা পেল না পৃথিবীর ফুসফুস। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলেও কতটা তৎপর ছিল প্রশাসনিক আধিকারিকেরা?
আরও পড়ুন
করোনায় আক্রান্ত ব্রাজিল প্রেসিডেন্ট বলসোনারো; কৃতকর্মের ফল?
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
নিঃসঙ্গ দিন কাটছে বৃদ্ধাশ্রমে, আবাসিকদের জন্য ‘হাগ টানেল’ তৈরি ব্রাজিলে