আচরণ অনেকটা রানির মতোই। সহজে দেখা পাওয়া মুশকিল। একটি গাছে বছরে কেবলমাত্র একটি দিনেই ফুটে ওঠে সে। তাও রাতের অন্ধকারে। এমন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের জন্যই বিরল ক্যাকটাস জাতীয় এই ফুলের নাম ‘কুইন অফ দি নাইট’। যদিও বিভিন্ন দেশে এক এক নামেই পরিচিত এই বিস্ময়পুষ্প। ভারতে এর পরিচয় ‘ব্রহ্মকমল’ নামে। বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং আবহাওয়া পরিবর্তন— এই জোড়া যাঁতাকলে পড়ে এবার ফুল ফোটানোর সময়ই বদলে ফেলল উদ্ভিদটি।
রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে ফুলের আকার নেয় কুঁড়ি। আবার সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই ঝরে পড়ে তার পাপড়ি। মূলত আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় অবধি এই ঘটনা দেখা যায় ভারতে। তবে এ-বছর অক্টোবর মাসের সপ্তাহ দুয়েক পেরিয়ে যেতে চলার পরেও হিমালয়ের পার্বত্য অঞ্চলে দিব্যি ফুটছে ব্রহ্মকমল। যা পারতপক্ষে দীর্ঘায়িত গ্রীষ্মকালেরই প্রাকৃতিক সূচক।
এর পাশাপাশিই লক্ষ্যণীয় আরও একটি ঘটনা। এই বিরল ফুল উত্তরাখণ্ডের রুদ্রপ্রয়াগের থেকে উঁচু অঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায় সাধারণত। মূলত সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩৫০০-৩৮০০ মিটার উচ্চতায়। তবে এই বছর তুলনামূলক অনেক নিচু অঞ্চল ছামোলিতেও ফুটেছে ব্রহ্মকমল।
কারণ হিসাবে কেদারনাথের এক বনদপ্তর বিভাগের আধিকারিক জানান, মহামারীর কারণে পর্যটকদের আনাগোনা এই বছর সীমিত। ফলে গাড়ি চলাচলের সংখ্যাও কমেছে উল্লেখযোগ্য ভাবে। আর সেই কারণেই কমেছে দূষণও। দূষণ কম হওয়ার দরুন অনেক নিচু স্থানেও দিব্যি ঝলমলাচ্ছে এই ফুল।
তবে শুধুমাত্র ফোটার এই অদ্ভুত সময়ের কারণেই বিস্ময়পুষ্প বলা চলে না একে। একাধিক চিকিৎসাগত গুণ রয়েছে ব্রহ্মকমলে। এই ফুল থেকেই তৈরি হতে পারে লিভারের অসুখ, হাড়ের যন্ত্রণা, জ্বর-সর্দির দাওয়াই। যার উল্লেখ রয়েছে প্রাচীন পুঁথিতেও...
Powered by Froala Editor