ইতিহাসে এই প্রথম। বিজ্ঞানীদের গবেষণায় ধরা দিল এক বিরল ভূমিকম্প। বিজ্ঞানীরা যাকে চিহ্নিত করেছে ‘বুমেরাং আর্থকোয়েক’ নামে। নামের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে এর পরিচয় এবং চরিত্র। এমন ভূমিকম্প বুমেরাং-এর মতোই কোনো অঞ্চল থেকে সৃষ্টি হয়ে আবার সেই অঞ্চলেই ফিরে আসে বহুগুণ শক্তি বাড়িয়ে। সেই চরিত্র থেকেই এমন নামকরণ। ‘ব্যাক প্রোপাগেটিং সুপারশিয়ার র্যা পচার’ নামেও পরিচিত এই ভূমিকম্প।
তবে যে ঘটনায় এই গবেষণার সূত্রপাত সেটার বিষয়ে আসা যাক। সম্প্রতি এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হলেও, ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৬ সালের ২৯ আগস্ট। লন্ডনের সাদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইম্পেরিয়াল কলেজের গবেষকরা একটি ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্প লক্ষ করেছিলেন। দক্ষিণ আমেরিকা থেকে আফ্রিকার দিকে একটি ভূমিকম্পের তরঙ্গের অস্তিত্ব প্রথমে চোখে পড়ে তাঁদের। যার উৎপত্তি আটলান্টিক মহাসাগরের বুকে বিষুব অঞ্চলে। তারপরেই বহুগুণ দ্রুত আরও একটি তরঙ্গ আঘাত করে ঠিক উল্টোমুখে। অনেকটা সোনিক বুমের মতোই ভেঙে দেয় ‘সিসমিক সাউন্ড ব্যারিয়ার’।
সাত মাত্রা কিংবা তার থেকেও বেশি শক্তিশালী ভূমিকম্প সাধারণত অনেকগুলি কম্পনের একটি সমাহার হয়। সমুদ্রের তলায় এই ধরণের কম্পনের সিসমিক চেহারা অনেকটাই সরল প্রকৃতির হয়। তবে স্থলভাগে থাকা সিসমোমিটার থেকে এর উৎস অনেকটা দূরে অবস্থান করায়, সমস্যা হয় এর চরিত্র বোঝার। এই ধরণের কম্পনের বিষয়ে বিস্তারিত বুঝতে সমুদ্রতলে সিসমোগ্রাফ বসানোর কথাও ভাবছেন বিজ্ঞানীরা।
২০১৬-র ওই কম্পনের চরিত্রের ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা প্রথমে খাড়া করেছিলেন একটি তত্ত্ব। তবে উপযুক্ত প্রমাণ ছিল না প্রথমে। পরে বেশ কিছু ফলাফলের ওপর ভিত্তি করেই সেই প্রমাণ মিলেছে। বিপরীতমুখী তরঙ্গ যে পৃথক কোনো ঘটনা নয়, তা নিশ্চিত করেছেন বিজ্ঞানীরা। তবে এই ভূমিকম্প এতটাই বিরল যে এর বিষয়ে অজানার পরিধি অনেকটাই বড়ো। তবে বিজ্ঞানীদের অনুমান এই ভূমিকম্প সমুদ্রতলে হওয়ায় বেঁচে গেছে সাধারণ জনজীবন। স্থলভাগে এমন ভূমিকম্প ভাবনাতীত ক্ষতিসাধন করার ক্ষমতা রাখে। পরবর্তীকালে এমন ভূমিকম্পকে লক্ষ্য করা গেলে তার চরিত্রের সম্পর্কে হাতে আসবে অজানা আরও তথ্য। ফলে পূর্ব-প্রস্তুতি নেওয়া যাবে মোকাবিলার বা এড়ানো যাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ...
আরও পড়ুন
সমুদ্রতটে লেখা ‘এসওএস’, তিনদিন পর জনমানবহীন দ্বীপ থেকে উদ্ধার ৩ ব্যক্তি
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
সমুদ্রের নিচে প্রাচীন সভ্যতার হদিশ, ঐতিহাসিকদের নজরে অস্ট্রেলিয়ার উপকূল