জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড নিয়ে লিখে ইংল্যান্ডের পুরস্কার জয়ী ভারতীয় বংশোদ্ভূত অনিতা

আজ থেকে ঠিক ১০১ বছর আগের একটি দিন। জালিনওয়ালাবাগের ময়দান সাক্ষী ছিল এক নারকীয় হত্যাকাণ্ডের। জেনারেল ডায়ারের নেতৃত্বে অসংখ্য নিরাপরাধ মানুষ খুন হয়েছিলেন নির্বিচারে। সরকারি হিসাবে সংখ্যাটা ছিল ৩৮৯। তবে আসলে হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। না, এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডের সময়কার পাঞ্জাবের গভর্নর ও' ডায়ার কিন্তু শেষ পর্যন্ত ছাড়া পাননি। লন্ডনে গিয়ে তাঁকে গুলি করে হত্যা করে আসেন উধম সিং। তবে সেটা জালিয়ানওয়ালাবাগের ঘটনার ২১ বছর পরে।

ভারতীয় বংশোদ্ভূত লেখিকা অনিতা আনন্দের সদ্য প্রকাশিত বই ‘দ্য পেসিয়েন্ট অ্যাসাসিনঃ আ ট্রু টেল অফ ম্যাসাকার, রিভেঞ্জ অ্যান্ড রাজ’ বইয়ের কেন্দ্রীয় চরিত্র এই দুটি মানুষ। একজন জেনারেল ডায়ার, আর অন্যজন উধম সিং। ডায়ারের পিছু ধাওয়া করে উধম সিং-এর লন্ডন যাত্রার পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা তুলে ধরেছেন তিনি। আর এই বইটিই এবছর ইংল্যান্ডের ‘হিস্ট্রি-লিটারারি’ পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হয়েছে। অসংখ্য ঐতিহাসিকের লেখা অসংখ্য বইয়ের তালিকা থেকে সেরা নির্বাচিত হয়েছে অনিতা আনন্দের বইটিই। বিচারকমণ্ডলীর সদস্য রানা মিটারের কথায়, এই বই শুধু দুটো মানুষের কথা নয়, সারা দেশের সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী যুদ্ধের কথা। অনিতা আনন্দের বই থেকে একটা লম্বা সময়কে চেনা যায়।

পুরস্কার পাওয়ার খবরে খুশি অনিতাও। তাঁর কাছে এই বই প্রাণের থেকেও বেশি। ইংল্যান্ডে এসে তিনি দেখেছেন আজও বহু মানুষের মধ্যে ব্রিটিশ শাসন নিয়ে কীধরনের ভুল ধারণা আছে। সেটাকেই ভাঙতে চেয়েছেন অনিতা। আর তার সঙ্গে মিশিয়েছেন নিজের পরিবারের মুখে শোনা নানা কাহিনি। উধম সিং-এর কাহিনি তাঁকে ছোটো থেকেই উদ্বুদ্ধ করত। আর তাই তাঁকেই বেছে নিলেন কেন্দ্রীয় চরিত্র হিসাবে। ইংল্যান্ডের মাটিতে ব্রিটিশ বিচারকদের হাতেই এমন একটি বই পুরস্কৃত হল। জালিয়ানওয়ালাবাগের অসংখ্য শহীদের প্রতি এর থেকে বেশি কিছু করার সামর্থ্য তো নেই, বলছেন রানা মিটার।

Powered by Froala Editor

Latest News See More