দৃষ্টি ছেড়ে গেছে তাঁকে, কণ্ঠে মান্না দে, মুগ্ধ লোকাল ট্রেনের যাত্রীরা

সকালের রানাঘাট-কৃষ্ণনগর লোকাল। যাত্রীরা কেউ খবরের কাগজে চোখ বুলিয়ে নিচ্ছেন, কেউ কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনছেন। বেশ কিছুক্ষণ পর আরেকটা আওয়াজ কানে এল। এটাও গানের আওয়াজ। সিন্থেসাইজার বাজিয়ে আপনমনে গান করছেন এক বৃদ্ধ। দৃষ্টিহীন। পুরনো দিনের গান। চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষণ শুনলে, বড় আরাম লাগে।

বেশ কয়েকমাস যাবৎ কৃষ্ণনগর যাওয়ার পথে ট্রেনে এই বৃদ্ধের গান শুনেছেন দীপাঞ্জয় ঘোষ। যতবারই শুনেছেন, মনে পড়েছে মান্না দে’র কণ্ঠ। প্রতিবারই সাধ্যমতো অর্থসাহায্য করেছেন, কিন্তু কথা বলা হয়ে ওঠেনি। অবশেষে একদিন ধরেই বসলেন বৃদ্ধকে। নাম মৃগাঙ্ক মৃধা। তাহেরপুরে বাড়ি। আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। তার মধ্যেও গানকে আঁকড়ে রেখেছেন প্রবলভাবে।

https://www.facebook.com/dr.dipanjoy/videos/1416092275210513/

একসময় ভিডিও তোলার প্রসঙ্গ উঠলে, মৃগাঙ্কবাবু দীর্ঘশ্বাস ফেলেন। উত্তর আসে, ‘ভাই রে, ভাগ্য সবার জন্য নয়।’ প্রসঙ্গক্রমে পাঠকের মনে পড়বে রানু মণ্ডলের কথা। একসময় তিনিও এই স্টেশনেই এক কোণায় বসে থাকতেন। সম্বল বলতে ছিল শুধু গান। আর আজ, তাঁর সফলতার পরবর্তী কথা তো সবারই জানা। এইরকম অসংখ্য রানু মণ্ডল, বা মৃগাঙ্ক মৃধারা ছড়িয়ে আছেন আমাদের চারপাশে। আমরা হয়ত প্রতিদিন দেখি। এড়িয়ে যাই। কিন্তু ওই মানুষগুলোর সবারই কি ভাগ্য ফেরে? তাঁদের প্রতিভা কি আলো পায়? শেষ পর্যন্ত দীপাঞ্জয়বাবু ভিডিওটি করেন। সোশাল মিডিয়াতে প্রকাশও করেন সেটা। কিন্তু যাবতীয় ঘটনার সারমর্ম মৃগাঙ্কবাবু বোধহয় আগেই বুঝিয়ে দিয়েছেন, একটা দীর্ঘশ্বাস দিয়ে।

Latest News See More