চিনের গ্রামে দশ হাজারেরও বেশি গাছ লাগালেন বিশেষভাবে সক্ষম দুই বন্ধু

একজন অন্ধ, আরেকজনের হাত নেই। কিন্তু তাতে কি মনের ইচ্ছা থেমে থাকে? বাঁচার এবং বাঁচানোর ইচ্ছা থেমে যায়? সমস্ত দুর্বলতাকে সরিয়ে রেখে এই দুই বন্ধু একসঙ্গে পুঁতে চলেছেন গাছ। আমরা তো বাঁচছি, ওরাও একটু বাঁচুক! তাহলে যে আমরাও ভালো থাকব। এই ভাবনা থেকেই এক দশকেরও বেশি সময় ধরে তাঁরা কাজ করে যাচ্ছেন। লক্ষ্য একটাই, যাতে পৃথিবীর ভালো হয়।

জিয়া হাইক্সিয়া এবং জিয়া ওয়েঙ্গি। দুজনেই থাকে উত্তর-পূর্ব চিনের ইয়েলি গ্রামে। জন্ম থেকেই হাইক্সিয়ার একটি চোখ অন্ধ, ২০০০ সালে কাজ করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় আরও একটি চোখ নষ্ট হয়ে যায়। গ্রামেই আলাপ হয় ওয়েঙ্গি’র সঙ্গে। যখন মাত্র তিন বছর বয়স, তখন একটি গুরুতর দুর্ঘটনার শিকার হন ওয়েঙ্গি। প্রাণে বেঁচে যান, কিন্তু হাত দুটো নষ্ট হয়ে যায়। তাতে কী হয়েছে; কাজ করা থামাননি দুজনের কেউই। থামাননি শুভ উদ্যোগ। তখনই মাথায় আছে গাছ পোঁতার।

ইয়েলি গ্রামের চারিদিকে একসময় প্রায় ফাঁকা জমি ছিল। সবুজের সেরকম কোনো চিহ্ন ছিল না। এই ব্যাপারটাই নজরে আসে দুই বন্ধু’র। শুরু হয় উদ্যোগ। সমাজের চোখে সহানুভূতির পাত্র হয়ে বাঁচতে চাননি হাইক্সিয়া এবং ওয়েঙ্গি। বরং কিছু করে দেখাতে হবে। সকাল সকাল উঠে দুজনে চলে যান বাজারে। স্বল্প পুঁজি, সেটা দিয়েই গাছ, বীজ কেনেন। তারপর গ্রামে নিয়ে এসে ওই জমিতে পুঁততে আরম্ভ করেন। দশ বছর আগে শুরু হয়েছিল এই কাজ। আজও থামেননি তাঁরা। থামেনি ওই গাছগুলোও। দেখতে দেখতে ১০,০০০-এর ওপর গাছ লাগিয়েছেন দুই বন্ধু! এখনও থেমে নেই। একসময়ের শুকনো জায়গা আজ সবুজ, সতেজ। সমাজের তথাকথিত ‘অযোগ্য’ দুজনই সম্ভব করেছেন এটা। আজ সবাই কুর্নিশ জানাচ্ছে জিয়া হাইক্সিয়া এবং জিয়া ওয়েঙ্গিকে।

Latest News See More