১৯৪৫। আমেরিকার ছোঁড়া পরমাণু বোমা ‘লিটল বয়’ জাপানের হিরোশিমা শহর থেকে মুছে দিয়েছিল এক লক্ষেরও বেশি প্রাণ। যে হাজারখানেক মানুষ প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন, তেজস্ক্রিয়তার দুঃসহতা নিয়েই ছিলেন তাঁরা। হিরোশিমার বাউন্ডারি অঞ্চলগুলিতে চলেছিল কয়েক ঘণ্টা ব্যাপী তেজস্ক্রিয় ‘ব্ল্যাক রেন’। যার ভয়াবহতাও কিছুমাত্র কম নয়। সম্প্রতি এই ‘ব্ল্যাক রেন’ ভিকটিমরা সুবিচার পেলেন জাপানের কোর্টে। এবার থেকে ‘গ্রাউন্ড জিরো’-র অধিবাসীদের মতোই তাঁদেরও মিলবে সুযোগ-সুবিধা।
২০১৫ থেকে এই দাবিতে লড়ছিলেন তেজস্ক্রিয় ‘ব্ল্যাক রেন’-এর এই ভিকটিমরা। ৫ বছর ধরে চলা মামলায় অবশেষে জয় এল। তবে, এই সময়ের মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ১০ জন অভিযোগকারী। যাদের বয়েস ছিল ৭০, ৮০ এবং ৯০-এর কোঠায়। আদালতের আদেশ অনুসারে, এবার সরকার কর্তৃক মাসোহারা এবং ফ্রি মেডিকাল পরিষেবা পাবেন তাঁরা। ১৯৫৭-র অ্যাটোমিক বোম্ব সারভাইবার রিলিফ আইন অনুযায়ীই তাঁদের এই ‘হিবাকুসা’ সার্টিফিকেট দেওয়ার সিদ্ধান্ত বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, ১৯৭৬ সালে জাপান সংশ্লিষ্ট অঞ্চলটিকে ‘হেবি রেন’ এবং ‘লাইট রেন’ অংশে বিভক্ত করে। স্থানীয় অধিবাসীরা তখনই অভিযোগ জানান, নদীর এপারের অংশকে ‘হেবি রেন’ আর ঠিক ওপারের অংশকেই ‘লাইট রেন’ হিসেবে চিহ্ণিতকরণের যৌক্তিকতা নিয়ে। জাপানি সরকার মোট ৬৫০০০০ জনকে ‘হিবাকুসা’ স্ট্যাটাস প্রদান করে যার মধ্যে অর্ধেকই ছিল হিরোশিমার বাসিন্দা।
তবে এই নিয়ে মামলা এই প্রথম নয়। ২০০৩ এও নিউক্লিয়ার ইনফর্মেশন সেন্টার নামে নাগরিকদের একটি সংগঠন আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল। যারা মনে করে ‘হিবাকুসা’ স্ট্যাটাস পাওয়া থেকে তাদের অন্যায়ভাবে বঞ্চিত করা হয়েছে। সেই মামলার শুনানি এখনও চলছে কোর্ট। এরই মাঝে এল এই জয়ের সুখবর।
আরও পড়ুন
মহামারী ছড়িয়েই বিশ্বযুদ্ধে বাজিমাত, আমেরিকা ধ্বংসের ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা জাপানের
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
জাপানি বোমা থেকে আমেরিকান সেনার দখলদারি – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সাক্ষী কলকাতা বন্দরও