পৃথিবী তো দূরের কথা। গোটা সৌরজগতকেই মুহূর্তের মধ্যে উদরস্ত করতে পারে সে। কথা হচ্ছে কৃষ্ণ গহ্বর বা ব্ল্যাকহোলকে নিয়ে। তবে এই মহাজাগতিক দৈত্যই হতে পারে আমাদের বৃহত্তম শক্তির উৎস। সম্প্রতি এমনটাই দাবি জানালেন গবেষকরা। তত্ত্বিকভাবে প্রমাণ করলেন, কীভাবে ব্ল্যাকহোল থেকে শক্তির উৎসারণ সম্ভব।
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী জড়িত ছিলেন এই গবেষণায়। এপিসি আন্তর্জাতিক পত্রিকায় সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণাটি। বহির্বিশ্বে উপনিবেশ স্থাপন করতে গেলে কী জাতীয় সমস্যা আসতে পারে, এবং তার সমাধানই বা কী— তা নিয়েই শুরু হয়েছিল গবেষণার কাজ। কিন্তু সৌরজগতের বাইরের কোনো গ্রহ বা স্পেস স্টেশনে শক্তির উৎসই ভাবিয়ে তুলেছিল তাঁদের।
মহাশূন্যে শক্তির যোগান দিতে মহাকর্ষ ক্ষেত্রকেই কাজে লাগাতে চেয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। বাহ্যিক মাধ্যাকর্ষণ শক্তিকে কোনো গ্র্যাভিটেশনাল গানের মাধ্যমে একত্রিত করে তাকে ব্যাটারিতে রূপ দেওয়াই ছিল গবেষকদের উদ্দেশ্য। আর সেই বিপুল পরিমাণ শক্তির উৎস হিসাবে ব্ল্যাকহোলকেই বেছে নেন তাঁরা। তবে এই শক্তি অবশ্য সাধারণ প্রচলিত শক্তি নয়। তা ঋণাত্মক শক্তি। তবে তাকে ধনাত্মক শক্তিতে পরিবর্তন করে নিলেই আর সমস্যা থাকবে না ব্যাটারির।
গবেষকরা জানাচ্ছেন, একটি ঘূর্ণায়মান ব্ল্যাকহোলের শক্তি অপরিসীম। বাহ্যিকভাবে তৈরি কোনো চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের সঙ্গে ব্ল্যাকহোলের এরগোস্পিয়ারের চৌম্বকক্ষেত্রের সংযোগ ঘটালেই এই নেতিবাচক শক্তিকে আয়ত্তে আনা যাবে। তবে শুধুমাত্র যান্ত্রিক পদ্ধতিই সক্ষম হবে না এই শক্তি নিষ্কাসনের প্রক্রিয়ায়। তার জন্য দরকার পড়বে বিশেষ সুপার-কম্পিউটার এবং শক্তিশালী অ্যালগরিদমের। পাশাপাশি ব্ল্যাকহোলের ঘূর্ণনের মাত্রা যত বেশি হবে, যত শক্তিশালী হবে তার প্লাজমার চৌম্বকীয় গঠন, ততই বেশি শক্তি আহরণ সম্ভব।
যদিও এখনও পর্যন্ত প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশে নীল-নকশা বানাতে পারেননি গবেষকরা। তা সত্ত্বেও তাত্ত্বিকভাবে এই শক্তির উৎসই হয়ে উঠতে পারে ভবিষ্যতের চাবিকাঠি। হয়তো এই শক্তি কাজে লাগিয়েই ‘দ্বিতীয় পৃথিবী’-কে দূষণমুক্ত রাখা যাবে আজীবনের জন্য...
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
দৈত্যাকার ব্ল্যাকহোলের দিকে ছুটে চলেছে পৃথিবী; ধ্বংসের পথে নীল গ্রহ?