সাম্প্রতিক বিভিন্ন ইস্যুতেই আলোচনায় উঠে এসেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তাঁর নিজের একের পর এক জায়গার নামবদলের ‘কীর্তি’ ইতিমধ্যেই সমালোচিত হয়েছে যথেষ্ট। তার ওপরে, উত্তরপ্রদেশে উত্তরোত্তর বেড়ে চলা ধর্ষণ ও প্রতিরোধে সরকারের ব্যর্থতা নিয়েও সরব হয়েছেন দেশের মানুষ। অথচ এবার দেখা গেল নতুন দৃশ্য। বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ধর্নায় বসলেন বিজেপিরই বিধায়করা। তাও খোদ যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যেই।
প্রায় ১০০ জন বিজেপি এমএলএ পার্লামেন্টের সামনে ধর্নায় বসেন গতকাল। তাঁদের অভিযোগ, রাজ্যে স্বেচ্ছাচারিতা বেড়েছে। এমনকি রাজ্যে হিংসার পরিমাণও বেড়েছে যথেষ্ট। অথচ বাকস্বাধীনতা বিপন্ন।
ঘটনার সূত্রপাত ঘটে যখন এমএলএ নন্দকিশোর গুর্জর নিজের বিরুদ্ধে আনা হেনস্থার অভিযোগে নিজের হয়ে সওয়াল করতে যান। মন্ত্রী সুরেশ খান্না তাঁকে কিছু বলতে না দিয়ে পার্লামেন্টের আসনে বসতে বলেন। এরপরেই স্পিকার হৃদয় নারায়ণ দীক্ষিতের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে পার্লামেন্টে ধর্নায় বসেন গুর্জর। তাঁর সঙ্গে অন্যান্য এমএলএ-রাও যোগ দেন। বিরোধী পক্ষের বহু নেতা ও সমাজবাদী পার্টির নেতা রামগোবিন্দ সিংও সেখানে বসেন।
পরে স্পিকার জানান যে, একজন এমএলএ-র পার্লামেন্টে অপমান মানে সবার অপমান। পরে দীক্ষিত এই ঘটনার উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবার প্রতিশ্রুতি দিলে ধর্না উঠে যায়। বিরোধীপক্ষ থেকে বলা হয়, সরকারপক্ষের নেতাদের কথাই যদি না শোনা হয় তাহলে বিরোধীদের কথা আর কেন শোনা হবে!
যদিও গুর্জর সম্বন্ধে দল এমনিতেও বেশ বিরক্ত। সম্প্রতি গুর্জরের ছোটো ছেলে জোরে গাড়ি চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়। গুর্জর নিজেও ইলেকশন অফিসারদের সঙ্গে কিছুদিন আগে বিবাদে জড়িয়ে পড়েছিলেন। সম্প্রতি তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি গাজিয়াবাদে নিজের অফিসে ডেকে এক হোটেল মালিককে লাইসেন্স সংক্রান্ত বিষয়ে হেনস্থা করেন। গাজিয়াবাদের এস পি নীরজ জাদৌনের কাছে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। বিজেপি সভাপতি স্বতন্ত্র দেব সিং তাঁকে শোকজ করার নোটিস দিয়েছেন। যদিও গুর্জর যোগী আদিত্যনাথকে চিঠিতে জানিয়েছেন, দলের অন্দরমহলে তাঁর বিরুদ্ধে করা চক্রান্ত করা হচ্ছে।
নিজেদের দলেই যদি এরকম অভিযুক্ত থাকে, তাহলে সে-দল কতখানি সৎ, সে-প্রশ্ন বারবার উঠে আসছে বিরোধীদের পক্ষ থেকে।