কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের পর এবার শুরু হয়ে গেল ইন্টারন্যাশানাল ফিল্ম ফেস্টিভাল অফ ইন্ডিয়া। অবশ্য সেখানেও বাঙালিদের জন্য এক বড়ো খবর। শনিবার অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী মঞ্চেই ঘোষণা হল অভিনেতা বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের নাম। এবছর ‘পার্সোনালিটি অফ দ্য ইয়ার’ সম্মান পেতে চলেছেন এই বাঙালি অভিনেতাই। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর জানিয়ে দিলেন সেই কথা। আগামী মার্চ মাসেই জাতীয় পুরস্কারের মঞ্চ থেকে সম্মান জানানো হবে তাঁকে।
ষোল-আনা বাঙালি অভিনেতা বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায় জাতীয় স্তরেরও মুখ। টলিউডের গণ্ডিতে আটকে রাখেননি নিজেকে। অথচ বারবার ফিরে এসেছেন বাংলায়। একদিন অভিনয়কে ভালোবেসেই ঘর ছাড়তে হয়েছিল তাঁকে। রক্ষণশীল পরিবারে একদিন ধরা পরে গেলেন, লুকিয়ে থিয়েটারে অভিনয় করেন তিনি। পরিবার আর স্বপ্নের মধ্যে স্বপ্নকেই বেছে নিয়েছিলেন তিনি। শুরু হল এক লড়াই। রঙমহল থিয়েটারের সামান্য রোজগার নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেছেন। কখনও রাত কাটিয়েছেন ফুটপাতে। অবশেষে ১৯৫৮ সালে সিনেমার পর্দায় প্রথম আত্মপ্রকাশ। ‘কংস’ সিনেমায় কৃষ্ণের ভূমিকায় দেখা গেল বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে। এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি।
উত্তমকুমারের পর বাঙালি সেদিনই পেয়ে গিয়েছিল আরও এক মিষ্টি হাসির অভিনেতাকে। আর ভিতরের মানুষটা? নিজস্ব সরলতা দিয়েই তো আপন করে নিয়েছিলেন ইন্ডাস্ট্রির সকলকে। কাজ করেছেন বেতার নাটকেও। সেখানেই তৃপ্তি মিত্রের সঙ্গে ‘সাহেব বিবি গোলাম’-এর সম্প্রচার শুনে যোগাযোগ করলেন গুরু দত্ত। বলিউডে তিনি এই নাটকটি নিয়েই সিনেমা করবেন। সেই সিনেমা আর হয়নি। তবে ‘বিশ সাল বাদ’ তাঁকে পরিচয় করিয়ে দিল জাতীয় স্তরের দর্শকদের সঙ্গে। ঋত্বিক ঘটকের সঙ্গেও কাজ করেছেন তিনি। অভিনয়ের জন্য শিখেছেন ঘোড়ায় চড়া, বক্সিং, এমনকি উর্দু ভাষাও। অবশ্য অসংখ্য তারকার ভিড়ে নিজের সম্পূর্ণটা দেওয়ার সুযোগ তিনি পেলেন না। ৮৪ বছরেও বিশ্বজিৎ বেঁচে আছেন তাঁর সৃষ্টির জগত নিয়েই। বাংলার একসময়ের রোমান্টিক আইকন বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়। এবার তিনি অন্যতম জাতীয় সম্মানের অধিকারী। বাঙালি সিনেপ্রেমীদের জন্য সত্যিই এ এক বড়ো খবর।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
শুধুমাত্র তাঁর বই নিয়েই আস্ত লাইব্রেরি; হারুকি মুরাকামি-কে বিরল সম্মাননা জাপানি বিশ্ববিদ্যালয়ের