একটা সময় জানলা খুললেই দেখা যেত চড়াই, পায়রাদের ভিড়। শহর, মফস্বল হোক বা গ্রাম - পাখিদের কমতি কোথাও ছিল না সেরকম। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলেছে। কোথায় হারাল সেসব পাখি?
ঠিক এই প্রশ্নটাই তুলেছে 'দ্য স্টেট অফ ইন্ডিয়ান বার্ড'। তাদের সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, যত দিন যাচ্ছে, ভারতে পাখির সংখ্যা কমছে দ্রুতগতিতে। সবথেকে বিপদে পড়েছে চড়াইয়ের মতো কমন বার্ডরা, যাদের বেড়ে ওঠা আমাদের আশেপাশেই। এমনকি, বেশ কিছু পাখির প্রজাতির সংখ্যা কমে এসেছে ১০ শতাংশে; যেমন গ্রেট ইন্ডিয়ান বাস্টার্ড। এই রকম আরও বেশ কিছু পাখির অস্তিত্ব সংকটের মুখে।
গত পঁচিশ বছরে যে হারে পাখিদের বংশ লোপ পেয়েছে তা অকল্পনীয় এবং ভয়াবহ! সমীক্ষা অনুযায়ী, ১০১টি পাখি প্রজাতির সংরক্ষণের গুরুতর প্রয়োজন। কিন্তু তার মধ্যে শুধু ৫৯টি প্রজাতিকে সুরক্ষিত রাখা গেছে। বাকিরা যথেষ্ট পরিমাণে বিপন্ন।
গবেষকরা এর জন্য দায়ী করেছে মানুষের কর্মকাণ্ডকেই। সমীক্ষা বলছে চড়াই-সহ এই পাখিদের দ্রুত গতিতে কমে যাওয়ার কারণ হল তাদের খাবার (কীট-পতঙ্গ) এবং থাকার জায়গার সংকট। অনেকেই বলে থাকেন যে মোবাইল টাওয়ারের তরঙ্গের কারণে এই পাখিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এদের বংশও লোপ পাচ্ছে। এসবের পাশে একটা বড় কারণ হল গাছ কাটা। ফলে পাখিদের বসবাসের জায়গা কমে যাচ্ছে। তারা আর উপায়ও পাচ্ছে না কোনো। সেই সঙ্গে শিকার তো আছেই।
সমীক্ষা বলছে যদি না দ্রুতগতিতে পাখিদের বসবাসের স্থান বাড়ানো যায়, তাহলে আগামী কিছু বছরের মধ্যে তাদের সংখ্যা আরো কমে আসবে। ইতিমধ্যেই চারিদিকে তাকালে এই দৃশ্যটিই দেখতে পাব আমরা। হাজার হাজার হাইরাইজের ভিড়ে আটকে থাকে পাখিরা। একসময় যারা আমাদের বাড়ির উঠোনে, ছাদে, জানলায় বসে থাকত, আজ তাদের দেখা মেলা ভার। পুরোপুরি মুছে গেলে, আখেরে ক্ষতি আমাদেরই…