পৃথিবীতে জন্মগতভাবে অন্ধত্বের শিকার প্রায় ৪ কোটিরও বেশি মানুষ। এছাড়াও প্রতিবছরেই কয়েক লক্ষ মানুষ বার্ধক্যজনিত কিংবা অন্যান্য নানান কারণে হারাচ্ছেন দৃষ্টিশক্তি। চক্ষুদান ছাড়া, আমাদের চিকিৎসা বিজ্ঞান এই অন্ধত্বকে মোকাবিলা করার রাস্তা খুঁজে পায়নি এখনও। তবে এবার সেই সমাধান করে ফেলল প্রযুক্তি। বিজ্ঞানীরা এবার তৈরি করে ফেললেন কৃত্রিম চোখ বায়োনিক আই।
বেশ কয়েক বছর ধরেই হংকং, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়ায় চলছিল এই গবেষণা। শেষ অবধি সাফল্য এল বিজ্ঞানীদের হাতে। অস্ট্রেলিয়ার মোনাস বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি তৈরি হল প্রথম সক্ষম কৃত্রিম চোখ। যা রেটিনা থেকেই মস্তিষ্কে পৌঁছে দেবে দৃষ্টির অনুভূতি। সম্পূর্ণ অন্ধ ব্যক্তিও ফিরে পাবেন দেখতে পাওয়ার সক্ষমতা।
বায়োনিক আই আর কিছুই নয় একটি হেডগিয়ার মাত্র। যাতে রয়েছে একটি ক্যামেরা এবং বেতার ট্রাস্নমিটার। অন্যদিকে মস্তিষ্কের মধ্যেও অস্ত্রোপচার করে বসানো হবে একটি ৯ মিলি মিটারের রিসিভার চিপ। ক্যামেরায় তোলা ছবিই ওই বেতারের মধ্যে দিয়ে পৌঁছে যাবে মস্তিষ্কের দৃষ্টিকেন্দ্রে। যা ১৭২টি রঙের সংমিশ্রণে (ফসফিন) তৈরি করবে দৃষ্টির অনুভূতি। সম্পূর্ণভাবে কোনো বস্তুর উপস্থিতি এবং আকারকে বুঝিয়ে দেবে মস্তিষ্ককে। উল্লেখ্য, যাঁদের রেটিনার পাশাপাশি দৃষ্টিস্নায়ুও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাঁদের ক্ষেত্রেও সফলভাবে কাজ করতে পারবে এই কৃত্রিম বায়োনিক চোখ।
প্রথম পর্যায়ের ট্রায়াল সফলতা পেয়েছে ইতিমধ্যেই। ভেড়ার দেহে এর ব্যবহারে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও খুঁজে পাননি বিজ্ঞানীরা। অস্ট্রেলিয়ায় কিছুদিনের মধ্যেই শুরু হতে চলেছে মানুষের দেহে এই প্রযুক্তির পরীক্ষামূলক প্রয়োগ। সেখানেও সবুজ সংকেত মিললে বাণিজ্যিক ভাবে বাজারে এসে যাবে এই চোখ। এখন অপেক্ষা শুধু তারই।
আরও পড়ুন
প্রযুক্তির সাহায্যে গর্ভস্থ শিশুকে ‘দেখলেন’ দৃষ্টিহীন মা
তবে দৃষ্টিক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ থাকছে না এই গবেষণা। বরং বিজ্ঞানীরা এই সাফল্যের পর নতুন উদ্যমে এই প্রযুক্তির ব্যবহারের জন্য গবেষণা শুরু করেছেন পক্ষাঘাতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ওপর। হাত, পায়ের অক্ষমতাকেও কাটিয়ে তুলতে এই প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে, সে ব্যাপারে যথেষ্ট আশাবাদী বিজ্ঞানীরা...
আরও পড়ুন
দৃষ্টি হারিয়েছেন সব মানুষ, এমনকি প্রাণীরাও; মেক্সিকোর ‘অভিশপ্ত’ গ্রামের পরিস্থিতি এমনই
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
কৃত্রিম ক্যামেরা থেকে সংকেত পৌঁছবে মস্তিষ্কে, দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেতে পারেন অন্ধরাও