কংক্রিটের গায়ে শ্যাওলা দেখলে ভুরু কুঁচকে যায় অনেকেরই। বাড়ি টিকবে তো? ভেতর থেকে পচে যাচ্ছে কংক্রিটের ভিত। ফলে আর্কিটেক্টদের কপালে চিন্তার ভাঁজ থেকেই যায়। শ্যাওলা রোখার জন্যই বিভিন্ন কোম্পানি বাজারে এনেছে নিত্যনতুন প্রোডাক্ট। কিন্তু একটি ডাচ স্টার্টআপ কোম্পানি হাঁটছে সম্পূর্ণ উল্টো পথে।
ডাচ স্টার্টআপ ‘রেস্পায়ার’ বাড়ি বানানোর জন্য বেছে নিয়েছে বায়োরিসেপ্টিভ কংক্রিট। যার উপর সহজেই গজিয়ে উঠবে শ্যাওলা। গড়ে উঠবে পরিবেশবান্ধব স্থাপত্য। টিম ‘রেস্পায়ারে’র নেতা অক ব্লেইজের মতে, শিকড় না-ছড়ানোর জন্য, শ্যাওলা বাড়ির ক্ষতিও করে না। বরং একরকম মজবুত হয়ে ওঠে বাড়ির ভিত। এক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো, শ্যাওলার কোনো শেকড় নেই। তা আটকে থাকে রাইজয়েডের সাহায্যে। এছাড়া উদ্ভিদের ধর্ম অনুযায়ী, শ্যাওলা শুষে নেয় কার্বন ডাই অক্সাইড। পরিশ্রুত থাকে চারপাশের বাতাস। কড়া রৌদ্রের তাপে তেতে ওঠে না ঘরের দেয়াল। সবুজ ঢাল উঁচিয়ে ঘরকে ঠান্ডা রাখে শ্যাওলার আস্তরণ। এছাড়া এই সবুজ-দেয়ালের আলাদাভাবে রক্ষণাবেক্ষণেরও প্রয়োজন নেই। কেবল মাঝেমধ্যে হাল্কা জল ছড়িয়ে দিলেই হল।
‘রেস্পায়ার’ তাদের প্রজেক্টের জন্য বেছে নিয়েছে পুনর্ব্যবহারযোগ্য কংক্রিট। বাধা যে প্রথম প্রথম আসেনি, এমনটা নয়। কিন্তু তারা হাল ছাড়েনি। এবার তাদের লক্ষ্য - এই কংক্রিটকে সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে এনে ফেলা।
ব্লেইজ রসিকতা করে এও বলছেন যে, ‘এই কংক্রিট গ্রাফিটি প্রুফ।’ অর্থাৎ বাড়ির মালিকের অজান্তে দেয়ালের গায়ে ছবিও আঁকা কঠিন হয়ে পড়বে। কারণ ঘন সবুজ ঢাল, রুখে দেবে গ্রাফিটির স্প্ৰে-পেইন্ট।
পরিবেশবান্ধব সবুজ বাড়ি গড়ে তোলার লক্ষ্যে এর মধ্যেই কয়েক কদম এগিয়ে গিয়েছে ‘রেস্পায়ার'। আমস্টারডামের রিভিরেনবুর্ট অঞ্চলে বেশ কিছু কংক্রিটের বারান্দা ভরে গিয়েছে শ্যাওলায়। এছাড়া ডাচ কোম্পানি ‘এনেকো’র সঙ্গে গাঁটছড়াও বেঁধেছে তারা। শীঘ্রই এনেকোর উইন্ড-টার্বাইনগুলি ঢেকে যাবে শ্যাওলায়।
Powered by Froala Editor