৬০ বছর বয়সী বিদ্যা রাজু। বন্যপ্রাণী উদ্ধারকারী। গুগলে ‘স্নেক রেসকিউয়ার কোচি’ লিখে সার্চ করলে সবার আগে উঠে আসবে বিদ্যা রাজুর নাম। এখনও পর্যন্ত ১০০০-এরও বেশি সাপ উদ্ধার করেছেন তিনি।
কীভাবে এই কাজ করেন তিনি? পদ্ধতিটি অবশ্য গতানুগতিকই। কোচি-র কোনো লোকালয়ের কোথাও সাপ পাওয়া গেলে ফোন আসে বিদ্যার কাছে। বিষয়টির সত্যতা যাচাই করার পর বিদ্যা ফোন করেন ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টকে। এরপর বেরিয়ে পরেন তাঁর সর্প উদ্ধার অভিযানে। সাপটি উদ্ধার করার পর তা তিনি দিয়ে দেন বন দপ্তরকে। এরপর সাপটিকে তার স্বাভাবিক বাসস্থানে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
বিদ্যা পেশায় কোচিন ন্যাচারাল হিস্ট্রি সোসাইটির ভলেন্টিয়ার। গত তিন বছর ধরে সেখানে তিনি গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে পরিযায়ী পাখিদের ভ্রমণ বিষয়ে অধ্যয়ন করছেন। কিন্তু এত কিছুর শুরু কীভাবে হল? বিদ্যা বলেন, ‘সেটা ২০০২ বা ২০০৩। আমরা গোয়ায় থাকতাম। আমি ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ডের ভলেন্টিয়ার ছিলাম। আমাদের পাখি পর্যবেক্ষণ করতে নিয়ে যাওয়া হত। সেখানেই আমাদের এক ভলেন্টিয়ার আমাদের সরীসৃপ প্রাণীদের কথা বলতেন। তিনি নিজেও সাপ উদ্ধার করতেন। আমি উৎসাহী হয়ে তাঁকে বলি যে, তিনি যখন এরপরে সাপ উদ্ধার করবেন আমায় যেন বলেন। এরপর তাঁর সঙ্গে আমিও অনেক সাপ উদ্ধার করি। সাপ অন্যান্যদের কাছে ভয়ঙ্কর লাগলেও আমার একটুও ভয় লাগেনি। বরং সাপ আমার কাছে বরাবরই কৌতূহলের বিষয়।’
২০১৮ সালে কেরালায় বন্যার সময় বিদ্যা সবচেয়ে বেশি সংখ্যক সাপ উদ্ধার করেছিলেন। শুধু সাপই নয়, কেরালার বিভিন্ন মন্দিরে হাতিদের চেন দিয়ে বেঁধে রাখার বিরুদ্ধেও লড়াই করেছেন তিনি। কিন্তু যেহেতু বিষয়টি ধর্মীয়, তাই তাঁর প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
এমন আরও অনেক বিদ্যাই কাজ করে চলেছেন নিরন্তর। একদিকে যখন বন্যপ্রাণীদের সংখ্যা কমতে কমতে বিপদসীমা ছুঁয়েছে ,তখন বিদ্যার মতন মানুষেরা আমাদের কাছে আলোর দিশা।