সেটা ইংরেজ আমল। বাড়ির কর্তারা চাইলেন, স্বাধীন হোক দেশ। ইংরেজদের পদানত হয়ে থাকা আর নয়। কিন্তু দেবী দুর্গার কাছে সেই প্রার্থনা জানানো যায় কী করে?
পাওয়া গেল উপায়। দেবীর পায়ের নিচে যে অসুর, তাকে পরানো হল ইংরেজদের মতো কোট-প্যান্ট। চুল আর গোঁফের রং হলুদ, সাহেবদের মতোই। ত্রিশূলবিদ্ধ হচ্ছে ইংরেজ অসুর। শুভের কাছে পরাজিত হচ্ছে অশুভ। খাস ইংরেজ আমলে এমন এক মূর্তি গড়া সাহসের কাজ তো বটেই!
আর সেই সাহসী কাজটাই করে দেখিয়েছিলেন ভবানীপুরের দে বাড়ির তৎকালীন সদস্যরা। ইংরেজদের দেশ থেকে তাড়ানোর প্রার্থনায়, অসুরের আদল গড়েছিলেন সাহেবদের মতো করে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও বদলায়নি সেই ধারা। আজও দে বাড়ির অসুর নির্মিত হয় ইংরেজদের আদলেই।
১৮৭০ সালে রামলাল দে-র হাত ধরে শুরু হয় এই পুজো। বিশ শতকের প্রথমার্ধেই ইংরেজের রূপ দেওয়া হয় অসুরকে। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পতন ঘটেছে আগেই। কিন্তু অসুর আজও রয়েছে একই। পরাধীন ভারতবর্ষের এক বৈপ্লবিক চেতনা নিয়ে আজও উদযাপিত হয় ভবানীপুরের এই প্রাচীন পরিবারের দুর্গোৎসব।
(ছবি - সৈকত সরকার)