চণ্ডীগড় নিবাসী ৯০ বছরের বৃদ্ধা হরভজন কাউরের জীবনে একটাই আক্ষেপ ছিল। চিরকাল তিনি অন্যের উপার্জনের উপর নির্ভর করে এসেছেন। নিজে উপার্জন করতে পারেননি কোনোদিন। মায়ের এই আক্ষেপের কথা শুনেছিলেন মেয়ে রবিনা। তারপর মেয়ের উদ্যোগেই স্থানীয় বাজারে বেসনের বরফির দোকান তৈরি দিয়ে পথচলা শুরু। চারবছর ধরে তাঁর ব্যবসা ধীরে ধীরে বেড়েছে। এখন হরভজন'স চণ্ডীগড় শহরে বরফি, আচার ও চাটনির একটি জনপ্রিয় ব্র্যান্ড। জনপ্রিয় এই ব্র্যান্ডের ট্যাগলাইন, 'বচপন ইয়াদ আয়েগি'।
মেয়ে রবিনার কথায়, অন্যান্য মায়েদের মতো হরভজন সবসময় সংসারের কাজ নিয়ে থাকতেন। সেই কাজের দাম কত হতে পারে, সে নিয়ে কোনো ধারণা ছিল না তাঁর। কিন্তু প্রথম দিনেই দোকান থেকে যখন ফেরেন তখন তাঁর উপার্জন ২০০০ টাকা। অর্থনৈতিক দিকটার থেকে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ এটাই, হরভজন সেদিন তাঁর কাজের মূল্য পেয়েছিলেন। আর প্রথম রোজগারের মুখ দেখেই আত্মবিশ্বাস ফিরে পান হরভজন। সেই আত্মবিশ্বাসের জোরেই এই বয়সেও এখনও ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
চারবছর ধরে তাঁর হাতের তৈরি বরফি, আচার আর চাটনির বিক্রি নেহাৎ কম নয়। শুধু বরফিই বিক্রি করেছেন ৫০০ কেজি। আজ ৯৪ বছর বয়সে এতো চাহিদা মেটানো তাঁর পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছে না। ব্যবসার কাজে সাহায্য করতো যে নাতনি, তারও সম্প্রতি বিবাহ হয়ে গেছে। কিন্তু তাইবলে ব্যবসা বন্ধ করতে রাজি নন হরভজন। প্রয়োজনে কর্মচারী রেখেও ব্যবসা চালিয়ে যেতে চান তিনি।
এদেশে এখনও অধিকাংশ মহিলাই নিজের রোজগারের কথা কল্পনাও করতে পারেন না। অধিকাংশ মহিলাই স্বামী বা অপর কোন পুরুষের উপর নির্ভরশীল। সেখানে হরভজনের মতো মায়েদের লড়াই যে নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি করে, সেকথা বলাই বাহুল্য।