কোভিড পরিস্থিতির পর নতুন করে দেশের কর্মসংস্থান এবং কর্মক্ষেত্র নিয়ে ভাবনাচিন্তার সময় এসে গিয়েছে। আর এর মধ্যেই গত মঙ্গলবার প্রকাশিত হল দেশের সাসটেইনেবল ডেভলপমেন্ট গোল আরবান ইনডেক্স (Sustainable Development Urban Index)। দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের নিরিখে দেশের কোন শহর কোথায় দাঁড়িয়ে রয়েছে, তাই বোঝার চেষ্টা করা হয়েছে এই সমীক্ষায়। আর এর মধ্যে অবশ্যই অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাপকাঠি হয়ে দাঁড়িয়েছে কর্মসংস্থান এবং কর্মসংস্কৃতি। আর এই বিভাগেই একেবারে পিছিয়ে পড়েছে কলকাতা। কর্মসংস্থান এবং কর্মসংস্কৃতির নিরিখে প্রথম স্থানে রয়েছে বেঙ্গালুরু (Bengaluru)। দেশের একমাত্র এই একটি শহরই এই বিভাগে আশানুরূপ ফল করতে পেরেছে। বাকি প্রতিটা শহরেই কর্মসংস্কৃতির হাল যথেষ্ট খারাপ। বিশেষ করে একই কাজে প্রাপ্ত অর্থের বৈষম্য রয়েছে সমস্ত শহরেই।
সার্বিকভাবে অবশ্য বেঙ্গালুরুকে অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়েছে হিমাচলপ্রদেশের রাজধানী সিমলা শহর। সিমলার দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন বা সাসটেইনেবল ডেভলপমেন্ট স্কোর ৭৫.৫। এরপর রয়েছে কোয়েম্বাটোর (৭৩.২৯), তিরুবন্তপুরম (৭২.৩৬) এবং চণ্ডীগড় (৭২.৩৬)। সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে ধানবাদ (৫২.৪৩) এবং মিরাট (৫৪.৬৪)। ২০১৭ সালে জাতিপুঞ্জের অধিবেশনে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের ১৭টি নিয়ামক স্থির করা হয়। এর মধ্যে ভারতের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে ২টি নিয়ামককে অগ্রাহ্য করা হয়েছে। বাকি ১৫টি নিয়ামকের ভিত্তিতে এই প্রথম পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রকাশ করল কেন্দ্রীয় নীতি আয়োগ।
১৫টি নিয়ামকের মধ্যে অষ্টম বিষয়টি ছিল কর্মসংস্থান ও কর্মসংস্কৃতি। এই বিভাগেই সবচেয়ে খারাপ ফল করেছে দেশের শহরগুলি। ৬৪-র ওপর স্কোর রয়েছে একমাত্র বেঙ্গালুরু শহরের। কলকাতা রয়েছে সবার নিচে। কর্মসংস্থান ও কর্মসংস্কৃতিতে কলকাতার স্কোর মাত্র ৩। দেশের অর্থনৈতিক রাজধানী মুম্বাইয়ের স্কোর মাত্র ১৭। এছাড়া আমেদাবাদ বা সুরাটের মতো শিল্পনগরীর অবস্থাও শোচনীয়। কর্মসংস্কৃতি ছাড়াও আরেকটি বিষয় নিয়ে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে বিশেষজ্ঞদের কপালে। আর সেটি হল খাদ্যনিরাপত্তা। দেশের অধিকাংশ শহরেই এখনও অনাহারের ছাপ প্রবল।
জাতিপুঞ্জের তরফ থেকে সদস্য প্রতিটি দেশকে ২০৩০ সালের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অথচ একমাত্র ফিনল্যান্ড ছাড়া কোনো দেশই সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি। ভারতের অবস্থা তো যথেষ্টই খারাপ। ১২০ স্থানে রয়েছে ভারত। এমনকি বাংলাদেশ বা নেপালের মতো প্রতিবেশী দেশগুলিও ভারতের চেয়ে বেশ কিছুটা এগিয়ে রয়েছে। ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে একমাত্র পাকিস্তানের স্থান ভারতের পিছনে। এই পরিস্থিতিতে আগামী ৯ বছর জোর কদমে কাজ করতে হবে, এই বিষয়ে একমত সকলেই। তবে তার রূপরেখা কেমন হবে, সেটা নিয়েই বিতর্ক রয়েছে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে।
আরও পড়ুন
দূষণ কমাতে ‘গ্রিন ডেলিভারি’, উদ্যোগে বেঙ্গালুরুর পোস্ট অফিস
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
১০৭টি ভাষা নিয়ে ভারতের সবচেয়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ জেলা বেঙ্গালুরু