মঙ্গলগ্রহে কি সত্যিই প্রাণ ছিল কোনোদিন? আজ তার শুষ্ক চেহারা দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। কিন্তু বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস, একসময় সত্যিই প্রাণধারণের উপযুক্ত পরিবেশ ছিল মঙ্গলগ্রহে। ছিল বায়ুমণ্ডলও। কিন্তু কোথায় গেল সেই বায়ুমণ্ডল? এই বহু-আলোচিত প্রশ্নেরই উত্তর দিলেন আইসার কলকাতার গবেষকরা। সম্প্রতি ভারতের মহাকাশ অধিবেশনে সেই গবেষণাপত্রই পেশ করলেন বিজ্ঞানী অর্ণব বসাক এবং দিব্যেন্দু নন্দী। আর এই গবেষণার সূত্র ধরেই উঠে আসছে আরও বেশ কিছু বৈজ্ঞানিক ধারণা।
আইসার কলকাতার ফিজিক্যাল সায়েন্স বিভাগের গবেষক অর্ণব বসাক এবং দিব্যেন্দু নন্দী মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলের হারিয়ে যাওয়ার কারণ খুঁজতে ব্যবহার করেছেন কম্পিউটার স্টিমুলেশন প্রযুক্তি। আজ থেকে ৪.৬ বিলিয়ন বছর আগে জন্ম হয় মঙ্গলগ্রহের। তখন তার চৌম্বকক্ষেত্র শক্তিশালী ছিল, ফলে সহজেই সৌরঝড় প্রতিহত করা যেত। কিন্তু ক্রমশ চৌম্বকক্ষেত্র দুর্বল হয়ে আসার ফলে সেই ক্ষমতা কমে যায়। আর সৌরঝড়ের প্রভাবেই ‘উড়ে গিয়েছে’ মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল। আজ সেখানে সামান্য কার্বন-ডাই-অক্সাইড ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। তাই প্রাণধারণের কথা কল্পনাই করা যায় না।
অর্ণব ও দিব্যেন্দুর গবেষণা আরও একবার প্রমাণ করল, বায়ুমণ্ডলের অস্তিত্বের সঙ্গে চৌম্বকক্ষেত্রের অস্তিত্ব অত্যন্ত নিবিড়। চৌম্বকক্ষেত্র দুর্বল হলে বায়ুমণ্ডল অস্তিত্ব হারায়। আর তখন প্রাণধারণও অসম্ভব হয়ে পড়ে। এই গবেষণার সূত্র ধরেই মোটামুটি ধারণা করা সম্ভব, পৃথিবীতে আর কতদিন প্রাণধারণের উপযুক্ত পরিবেশ বজায় থাকবে। তাছাড়া নাসা, স্পেস-এক্স সহ নানা সংস্থা যে মহাকাশে প্রাণধারণের উপযুক্ত পরিবেশ খুঁজছে, সেখানেও নতুন মাপকাঠি যোগ করা সম্ভব। হয়তো এভাবেই খুঁজে পাওয়া যাবে নতুন কোনো গ্রহ। আর পৃথিবী ছেড়ে সেখানেই গড়ে উঠবে মানুষের উপনিবেশ।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
নাসার মঙ্গল-অবতরণের অন্যতম কাণ্ডারী দুই বাঙালি-সহ চার ভারতীয় বংশোদ্ভূত