ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে গবেষণায় আন্তর্জাতিক সম্মান বাঙালি বিজ্ঞানীর

মানবদেহে ওষুধে প্রভাব সর্বোচ্চ করতে গেলে নজর রাখতে হবে তার রাসায়নিক গঠনে। ওষুধের সঠিক গঠনই ঠিক করে দেয় কোন অঙ্গে কাজ করবে তার প্রতিক্রিয়া। তবে শুনতে যতটা সহজ, কাজটা ঠিক ততটাও নয়। মানবদেহ এবং রসায়নের মধ্যে পারস্পারিক এই রহস্যের পর্দা উন্মোচন করেই আন্তর্জাতিক সম্মান আনলেন বাঙালি বিজ্ঞানী। সম্প্রতি ‘ভিডি গুড ইন্টারন্যাশনাল সাইয়েন্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড’ পুরস্কার পেলেন বঙ্গসন্তান ডঃ মহম্মদ মইদুল ইসলাম।

মুর্শিদাবাদের লালগোলা থানার তারানগর গ্রামের বাসিন্দা মৈদুল ইসলাম বর্তমানে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণারত। গত এক দশক ধরেই জৈব-রসায়নে গবেষণা করছেন তিনি। গবেষণার মুখ্য বিষয় ওষুধের আণবিক গঠনের পরিবর্তন এনে, তার কার্যকারিতা বৃদ্ধি করা। সঙ্গে কমিয়ে আনা ওষুধ তৈরির খরচ এবং সময়ও। ওষুধের আণবিক গঠন ডিএনএ, আরএনএ, প্রোটিনের সঙ্গে কী ধরণের বন্ধন তৈরি করে, তারও সন্ধান দিয়েছেন এই তরুণ অধ্যাপক।

তবে প্রান্তিক জেলার বাসিন্দা হওয়ায় ছোটোবেলা থেকেই সম্মুখীন হয়েছেন নানা প্রতিবন্ধকতার। পদ্মায় ভূমিক্ষয়ে তলিয়ে গিয়েছিল ফসলি জমি, ক্ষেত। তারপর ভিটে-মাটি ছেড়ে উঠে এসে নতুন করে বসতি স্থাপন লালগোলায়। শুরু করা আবার নতুন থেকে। গবেষক মইদুলের মধ্যে লড়াইয়ের মানসিকতা বুনে দিয়েছিলেন তাঁর বাবা মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট মহম্মদ জাহেদুল ইসলাম। বাবার চরিত্রকে দেখেই হারতে শেখেননি তিনি। অসম লড়াইয়ে শক্ত হয়েই লড়ে গেছেন ক্রমাগত।

তার ফলাফলও মিলেছে। খাবারে রঙের প্রভাবের ওপর গবেষণায় গত এক দশকে তিন তিনটি আন্তর্জাতিক সম্মানে ভূষিত হয়েছেন ডঃ মইদুল ইসলাম। এবার মুকুটে যুক্ত হল আরও একটি আন্তর্জাতিক সম্মানের পালক। সম্প্রতি কোয়েম্বাটুরে আয়োজিত একটি আন্তর্জাতিক সেমিনারে তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয় ‘সেরা গবেষণা পুরস্কার’। মইদুল ছাড়াও বিশ্বব্যাপী আরও পাঁচ গবেষক এই সম্মান পেলেন এই বছর...

Powered by Froala Editor