বাইরে থেকে আনা জিনিস করোনামুক্ত করতে যন্ত্র, আশ্চর্য কীর্তি রহড়ার অধ্যাপকের

শুধুই কি মাস্ক, গ্লাভস পরলেই আমরা নিরাপদ ভাইরাসের থেকে? বাজার থেকে কেনা শাক-সব্জি, এমনকি হাতবদলের সময় টাকার মধ্যে দিয়েও সংক্রমিত হতে পারে করোনাভাইরাস। তবে উপায়? এবার ভাইরাসকে জব্দ করার সেই উপায়েরই সন্ধান দিলেন এক বাঙালি বিজ্ঞানী। তৈরি করলেন একটি যন্ত্র, যা আধঘণ্টার মধ্যেই নিষ্ক্রিয় করে দেবে ভাইরাসকে।

এই গবেষণার পিছনে রয়েছে যাঁর নাম, তিনি অধ্যাপক ডঃ স্বপনকুমার ঘোষ। রহড়া রামকৃষ্ণ মিশন সেন্টিনারি কলেজের বোটানি বিভাগে অধ্যাপনা করেন অঙ্কোলজি এবং বায়োকন্ট্রোল বিভাগে। এর আগেও তিনি প্লাস্টিক ভক্ষণকারী ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান দিয়ে সাড়া ফেলেছিলেন বিজ্ঞানমহলে। আবার উঠে এলেন সংবাদমাধ্যমের প্রথম লাইনে। এই গবেষণার মূল ভাবনা ছিল জল ছাড়াই কোনো বাইরে থেকে জিনিসকে জীবাণুমুক্ত করা। বাজার করে আনা নানান শাক-সব্জি জল দিয়ে ধুয়ে নিচ্ছেন অনেকেই। তবে সব জিনিস ধোয়া সম্ভব হয় না। পাশাপাশি জলের অপচয়ও হচ্ছে এতে।

বাঙালি অধ্যাপকের তৈরি এই যন্ত্র মূলত আল্ট্রা-ভায়োলেট রশ্মির সাহায্যেই ধ্বংস করবে ভাইরাসকে। সেইসঙ্গে ভাইরাস নিধনের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে তামা এবং অ্যালুমিনিয়ামের মতো ধাতু। ফলে কাগজ এবং ইলেকট্রনিক কোনো সামগ্রী জীবাণুমুক্ত করতে গেলেও ভিজবে না সেগুলি।

বাইরে থেকে আনা কোনো জিনিসকে এই যন্ত্রের মধ্যে আধঘণ্টা রাখলেই করোনা ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করে দেবে এই যন্ত্র। সক্রিয় ভাইরাস নিয়ে পরীক্ষা করেও দেখেছেন তিনি। দেখা যায়, আধঘণ্টার মধ্যে সেই ভাইরাস হারিয়েছে তাঁর সংক্রমণ ক্ষমতা। স্বপনবাবুর এই আবিষ্কারকে মান্যতা দিয়েছে মার্কিন সংস্থা ‘সেন্ট্রাল অফ ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রোটেকশন’। তাঁর গবেষণা প্রশংসিত হয়েছে কর্ণেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাপত্রেও। গত মাসেই এই যন্ত্রের পেটেন্টের জন্য আবেদন করেন অধ্যাপক স্বপনকুমার ঘোষ। যন্ত্র তৈরির কাজ শেষ হয়েছে তারও মাস দেড়েক আগে।

আরও পড়ুন
রাশিয়া, বিশ্বের প্রথম করোনা ভ্যাকসিন ও কিছু সংশয়

তবে সবথেকে বড়ো কথা হল এই যন্ত্রের দাম। অর্থ থাকবে সাধারণের সাধ্যের মধ্যেই। স্বয়ংক্রিয় এবং মানবচালিত দু’ধরণের প্রকারে পাওয়া যাবে এই যন্ত্রটিকে। প্রথমটির ক্ষেত্রে দাম থাকবে ৯ হাজারের মধ্যে। দ্বিতীয়ক্ষেত্রে তাঁর মূল্য হবে ভারতীয় মুদ্রায় ৫ হাজার। ভ্যাকসিন বাজারে চলে এলেও রক্ষা মিলবে ভাইরাসের থেকে, এমনটার সঙ্গে সহমত না অনেক বিশেষজ্ঞই। এখনও বহুদিন ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করেই চলতে হবে আমাদের। এ বিষয়ে জানিয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও। তাই বলাই বাহুল্য সংক্রমণের এমন আবহে এই যন্ত্রের গুরুত্ব অপরিসীম...

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
করোনা যুদ্ধে সামিল বিল গেটস, ১৫ কোটি ডলার অনুদান ভারতীয় সংস্থা সিরামকে