মহিলাদের রাগবি খেলায় উৎসাহ দিতে প্রচারের মুখ উত্তরবঙ্গের সন্ধ্যা

শিলিগুড়ির পূর্বদিকে বৈকুণ্ঠপুর অরণ্য বহু পর্যটকের কাছেই পরিচিত নাম। যাঁরা সেখানে গিয়েছেন তাঁরা জানেন, এলাকার সমস্ত মানুষের জীবিকা চলে চা বাগানের উপর নির্ভর করে। আবার সেই বাগানগুলির অবস্থাও শোচনীয়। এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেই বেঁচে থাকার নতুন সংজ্ঞা তৈরি করছেন সন্ধ্যা রাই। ইতিমধ্যে রাগবি খেলোয়াড় হিসাবে আন্তর্জাতিক স্তরে সম্মান পেয়েছেন তিনি। আর সেই সাফল্যের তালিকাতেই যুক্ত হল নতুন একটি পালক। ভারতের মহিলাদের রাগবি খেলায় উৎসাহ দেওয়ার জন্য তৈরি ‘আনস্টপেবল ইন্ডিয়া’ প্রচার কর্মসূচির মুখ হিসাবে উঠে এল তাঁর নাম। সেইসঙ্গে এশিয়ার ৩২ জন মহিলা রাগবি খেলোয়াড়ের তালিকায় নাম তুলে নিলেন তিনি।

ছোটো থেকেই সন্ধ্যা স্বপ্ন দেখতেন নতুন কিছু করবেন। শুধু নিজের জন্য নয়, এমন কিছু করবেন যাতে তাঁর পরিবার এবং গ্রাম একটা বিকল্পের সন্ধান পায়। আর সেই সন্ধান তিনি পেলেন ডনবস্কো অ্যাসাইলামের উদ্যোগে। যোগ দিলেন সেখানকার রাগবি ট্রেনিং সেন্টারে। নিজের প্রতিভার প্রমাণ দিতে বেশি সময় লাগেনি। এরপর শুধু একের পর এক সীমানা টপকে যাওয়া। ২০১৩ সালে ‘জাঙ্গল ক্রো’ মহিলা দলে যোগ দিলেন তিনি। এরপর একের পর এক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ম্যাচে নিজের প্রতিভার প্রমাণ রাখলেন। জাতীয় দলেও সুযোগ পেলেন। তবে এর মধ্যেই মায়ের সঙ্গে চা বাগানের কাজেও হাত লাগিয়েছেন।

বৈকুন্ঠপুরের ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যত বলতে শুধুই চা বাগান। এমনকি দশম শ্রেণীর পর সেখানে পড়াশোনার সুযোগও নেই। এর মধ্যেই বিকল্প তৈরি করছেন সন্ধ্যা। স্থানীয় মেয়েদের রাগবি খেলায় উৎসাহ দিতে নিজেই তৈরি করেছেন ‘পাস ফর প্যাশন’ প্রকল্প। আর ‘আনস্টপেবল ইন্ডিয়া’ প্রচার কর্মসূচির মুখ হিসাবে সন্ধ্যার দায়িত্ব এখন আরও অনেকটা বেশি। আগামী দিনে সন্ধ্যা যে রাগবির মাঠে বাংলার ভাবমূর্তিকে আরও অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে যাবে, সে-কথা বলাই বাহুল্য।

Powered by Froala Editor

Latest News See More