“কফি আজকের সময়ে দাঁড়িয়ে সারা ভারতেই বেশ জনপ্রিয় পানীয়। বরং খানিকটা ওভাররেটেড বলা যায়। অথচ কয়েক বছর আগেও কফি নিয়ে মানুষের তেমন আগ্রহ ছিল না।” বলছিলেন তথ্যচিত্র নির্মাতা প্রতীক দে চৌধুরী। এই যে হঠাৎ জনপ্রিয়তা বেড়ে যাওয়া, এটাকে ধরতেই ক্যামেরা তুলে নিয়েছেন তিনি। দিল্লি থেকে চেন্নাই পর্যন্ত বাইক সফরে ধরতে চেয়েছেন দেশের নানা জায়গার কফিপানের চরিত্র। আর এভাবেই তৈরি হতে চলেছে ভারতের কফি বিষয়ক প্রথম তথ্যচিত্র ‘সি ফর কফি’।
বর্তমানে ব্যাঙ্গালুরু প্রবাসী প্রতীকের দীর্ঘদিনের সহকর্মী তথা বন্ধু বিনি ভার্গিস আসলে একজন বারিস্তা ট্রেনার। তিনিই এই ছবির প্রযোজনা করেছেন। মূলত তাঁর সঙ্গে কথা বলতে বলতেই এমন একটা বিষয় মাথায় আসে বলে জানালেন প্রতীক। ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে শুটিং-এর পর অতিমারীর কারণে দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ হয়ে ছিল। তবে এবার পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। “আসলে কফি বলতে আমরা এখনও ইনস্ট্যান্ট কফিকেই বুঝি। কিন্তু কফির যে বিন-টু-কাপ লম্বা একটা পদ্ধতি, সেটার বিষয়ে আমরা অনেকেই খোঁজ রাখি না। আজকাল কিন্তু এই ধরণের স্পেশালিটি কফির চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে।” বলছিলেন প্রতীক।
এই তথ্যচিত্রে তিনি ধরতে চেয়েছেন কফির সেই শিল্পকে। বা বলা ভালো এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত অসংখ্য মানুষকে। “আমরা খুব নতুন কোনো তথ্য খুঁজতে যাইনি। বরং বিভিন্ন মানুষের কাছে কফি কী, তাঁদের জীবনে কফির গুরুত্ব কী, এটাই বোঝার চেষ্টা করেছি।” আর তাই প্রতীক জানালেন, দেশের প্রায় ১৫টা শহরে সব জায়গাতেই তাঁরা মানুষকে একই ধরণের প্রশ্ন করেছেন। প্রায় ৩০ জনের সাক্ষাৎকার নিয়ে তৈরি হয়েছে সম্পূর্ণ সিনেমাটি। সেখানে কফি বাগানের কুলিদের থেকে শুরু করে কফি নির্মাতা এমনকি ক্রেতাদের নানা দৃষ্টিভঙ্গি উঠে এসেছে। আর এই পুরো বিষয়টি তিনি ক্যামেরাবন্দি করেছেন ২০ দিনের বাইক-ট্রেকে।
তবে সিনেমাটি তৈরির কাজ শেষ হলেই এখনই বাণিজ্যিকভাবে মুক্তির কথা ভাবছেন না প্রতীক। তাঁর ইচ্ছা আগে কয়েকটি পুরস্কার কমিটির কাছে পাঠাবেন সিনেমাটি। তারপর ছবির প্রিমিয়ারের ব্যবস্থা করবেন। বাঙালি জীবনের সঙ্গে ঐতিহাসিকভাবে চায়ের যোগাযোগ যতই নিবিড় হোক, আজকের দিনে দাঁড়িয়ে কফির ভূমিকাও কিছু কম নয়। তবে সেই কফিকে নিয়ে যে এমন একটা তথ্যচিত্র বানিয়ে তোলা যায়, সেটা ভেবে দেখেননি কেউই। ‘সি ফর কফি’ সেইদিক থেকে একটা ইতিহাস গড়ে তুলতে চলেছে, সন্দেহ নেই।
আরও পড়ুন
নবারুণ ভট্টাচার্য, আড়বেলিয়া ও এক তথ্যচিত্রের জন্মকাহিনি
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
কানে গোল্ডেন আই-জয়ী তথ্যচিত্রের সঙ্গে জড়িয়ে কলকাতার তিন তরুণ-তুর্কি