রহস্যে ঘেরা মহাদেশ আফ্রিকা। একসময় এখান থেকেই শুরু হয়েছিল আধুনিক মানুষের যাত্রা। তারপর সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে সেই প্রজাতি। কিন্তু আজও আফ্রিকার অরণ্যের অন্ধকারে কত না বৈচিত্র্য লুকিয়ে আছে। কত ধরণের জিন খুঁজে পাওয়া যায় আফ্রিকান জনজাতির মধ্যে? তার ছড়িয়ে থাকার ধরণটাই বা কীরকম? এই প্রথম সে-বিষয়ে বিশদ গবেষণা প্রকাশ করলেন বিজ্ঞানীরা। আর এই ঐতিহাসিক গবেষণার ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থেকেছে এক বাঙালি দম্পতিও। সম্প্রতি ‘নেচার’ পত্রিকায় প্রকাশিত এই গবেষণাপত্রের লেখকদের মধ্যে রয়েছেন অনন্য চৌধুরী এবং ধৃতি সেনগুপ্ত।
২০১০ সালে কলকাতার রাজাবাজার সায়েন্স কলেজ থেকে পিএইচডি করে জোহানেসবার্গের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন অনন্য চৌধুরী। এর কিছু পরেই জোহানেসবার্গে যান ধৃতি সেনগুপ্ত। সেখানেই ঘরকন্নার পাশাপাশি শুরু গবেষণা। যার বিষয় হল মানুষের জীনের নানা ধরনের বৈচিত্র্য। ক্রমে এই গবেষণার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন আরও প্রায় ৩০ জন বিজ্ঞানী। ধৃতি সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, এর আগ আফ্রিকান জনজাতির জিনবৈচিত্র্য নিয়ে ছোটোখাটো কিছু গবেষণা হলেও মূলত আফ্রিকা থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার কাজটা চলেছে ইউরোপ বা আমেরিকায়। এই প্রথম আফ্রিকায় বসে পুরো কাজটা করলেন তাঁরা।
দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের সিডনি ব্রেনার ইন্সটিটিউট ফর মলিকিউলার বায়োসায়েন্স ও কেপটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ে এই গবেষণাপত্রের প্রধান কাজগুলি হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, আফ্রিকার ৩০০ জিনোম থেকে প্রায় ৩০ লক্ষ জেনেটিক ভ্যারিয়েন্টস পাওয়া যায়। এর আগে এমন বৈচিত্রের সন্ধান জানতেন না বিজ্ঞানীরা। এছাড়া কীভাবে এই বৈচিত্র্য সৃষ্টি হল, সেবিষয়েও বিশদে আলোচনা করেছেন তাঁরা। ‘নেচার’-এ প্রকাশিত এই গবেষণাপত্র যে জিন গবেষণা এবং নৃতত্ত্বের জগতে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, সে কথা বলাই বাহুল্য। তবে এই সাফল্যের খুশির মধ্যেই আগামী গবেষণার কাজ শুরু করে দিয়েছেন এই বাঙালি দম্পতি। হয়তো আগামী দিনে আরও গুরুত্বপূর্ণ কোনো আবিষ্কারের সঙ্গে জড়িয়ে থাকবে তাঁদের নাম।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে গবেষণায় আন্তর্জাতিক সম্মান বাঙালি বিজ্ঞানীর