মানুষের প্রস্রাব দিয়ে তৈরি বিয়ার!

তিমির বমি থেকে শুরু করে বিষাক্ত সাপ, কাঁকড়াবিছে— বিশ্বজুড়ে নানান সংস্কৃতিতে মানুষের খাদ্যাভ্যাস বেশ বিচিত্রই বটে। সেই কারণেই হয়তো মানুষ সর্বভুক তকমা জুড়েছে মানুষের নামের পাশে। তবে নতুন জায়গায় গিয়ে পানীয় পান করার পর যদি জানতে পারেন, সেটি তৈরি হয়েছে মানুষেরই মূত্র দিয়ে?

হ্যাঁ, অবাক লাগলেও এমনটাই সত্যি। সিঙ্গাপুরে বিয়ারের অন্যতম উপদান মানুষের প্রস্রাব। সম্প্রতি, ইন্টারনেটে নতুন করে জায়গা করে নিয়েছে সিঙ্গাপুরের ব্রুয়ারিতে তৈরি এই বিয়ার। তার জনপ্রিয়তাও সে-দেশে কম নয়। তবে ভয়ের কিছু নেই। এই বিয়ার মূত্র দিয়ে তৈরি হলেও, তাতে ইউরিন কিংবা ইউরিয়ার স্বাদ বা গন্ধ নেই কোনো। কিন্তু তা সত্ত্বেও বিয়ারে মানবমূত্র ব্যবহারের কারণ কী? 

এই প্রশ্নের উত্তর পেতে গেলে, বুঝতে হবে সে-দেশের প্রাকৃতিক অবস্থান। চারিদিক সমুদ্রবেষ্টিত হওয়ায়, সিঙ্গাপুরে পানীয় জলের সংকট চিরকালই। সেখানে ভূগর্ভস্থ জলও লবণাক্ত। তাই পানীয় জলের জন্য নির্ভর করতে হয় বৃষ্টির ওপর। পাশাপাশি মালয়েশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলি থেকে আমদানি করা হয় জল। তবে তারপরেও গোটা দেশে পানীয় জলের চাহিদা মেটে না। তাই বাধ্য হয়েই জল পুনর্ব্যবহারের পথ বেছে নিয়েছে সিঙ্গাপুর।

মানুষের ব্যবহৃত জল অর্থাৎ সিওয়েজকে ফিল্টার করেই তৈরি করা হয় পানীয় জল। আর এই পরিশোধনের কাজ হয় সরকারি প্ল্যান্টেই। ‘নিওয়াটার’ নামে সেই জল বিক্রি হয় সিঙ্গাপুরের বাজারে। এই একই পদ্ধতি অবলম্বন করেই বিয়ার তৈরি করছে সিঙ্গাপুরের বিয়ার প্রস্তুতকারক সংস্থাটি ‘নিউব্রিউ’ ব্রুয়ারি। কারণ সিকিভাগ অ্যালকোহল থাকলেও, বিয়ারের মূল উপাদান হল জল। স্থানবিশেষে প্রায় ৯০-৯৫ শতাংশ জল থাকে বিয়ারে। সেই জলের সরবরাহ বজায় রাখতেই মানব প্রস্রাবকে পরিস্রুত করে তা পানীয় জলে রূপান্তরিত করছে সংশ্লিষ্ট সংস্থাটি। অবশ্য তা নিয়ে হেলদোল নেই সিঙ্গাপুরবাসীর। তাঁদের কাছে এই বিয়ার রীতিমতো জনপ্রিয়। 

আরও পড়ুন
পরিত্যক্ত রেলপথে ভ্রমণ, বিচিত্র শখ দু-ভাইয়ের

বছর দুয়েক আগে ডেনমার্কের সংস্থা পিনসার বিয়ার। তারাও বিয়ার প্রস্তুত করেছিল মানুষের মূত্র থেকেই। ইউরোপ জুড়ে বিক্রি হয়েছিল প্রায় ৬ লক্ষ বোতল। সেবারও ইন্টারনেটে রীতিমতো হইচই পড়ে গিয়েছিল তা নিয়ে। সিঙ্গাপুরের ‘নিউব্রিউ’-এর দৌলতে আরও একবার চর্চায় উঠে এল প্রস্রাব থেকে প্রস্তুত বিয়ারের গল্পকথা…

আরও পড়ুন
ইতালির গ্রাম হয়েও মাতৃভাষা ভিন্ন, কী রহস্য লুকিয়ে এই বিচিত্র ‘প্রদেশে’?

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
ভূত তাড়াতে ‘অগ্নিবাণ’, ‘শরীর বন্ধন’ কিংবা ‘রক্ষাবাণ’ – বিচিত্র সব মন্ত্রের গল্প

More From Author See More