বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় বোধহয় জলবায়ু পরিবর্তন। আর সেই বিষয়কে হাতিয়ার করেই এবার বিশ্বজয় করল বাংলাদেশের অ্যানিমেশন সিনেমা ‘টুমরো’ (Tomorrow)। কান বিশ্ব চলচ্চিত্র উৎসব (Cannes World Film Festival) প্রতিযোগিতায় সেরা অ্যানিমেশন সিনেমা হিসাবে নির্বাচিত হল ২০১৯ সালের এই সিনেমাটি। গত সপ্তাহেই এই পুরস্কারের কথা ঘোষণা করে সংস্থা। স্বাভাবিকভাবেই আনন্দে মেতেছেন বাংলাদেশের সংস্কৃতি জগতের অনেকেই।
জলবায়ু পরিবর্তন যেভাবে একটা মূলগত সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে, তাতে আগামীদিনে আমরা কোন ভবিষ্যতের সামনে দাঁড়াতে চলেছি? এই প্রশ্ন এখন প্রত্যেক মানুষের মনেই। আর সেই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজলেন পরিচালক মহম্মদ সিহাবউদ্দিন। ২০১৭ সালেই শুরু হয়েছিল এই সিনেমার কাজ। চিত্রনাট্যে মূলত একটি কিশোরের জীবনকে ধরে আগামীদিনের পরিস্থিতি দেখাতে চেয়েছেন সিহাব। সেইসঙ্গে আধুনিক প্রযুক্তি কীভাবে আমাদের প্রকৃতি-পরিবেশকে গিলে খাচ্ছে, তার সমসাময়িক ছবিও তুলে ধরেছেন। আর পুরোটাই দেখিয়েছেন গ্রাফিক্সের মাধ্যমে।
সিনেমাটির গ্রাফিক্সের দায়িত্বে ছিল বাংলাদেশেরই সংস্থা সাইকোর স্টুডিও। এর আগে এই সংস্থার বেশ কিছু সিনেমাই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে প্রশংসা কুড়িয়েছে। তবে বিশ্বের সেরা অ্যানিমেশন সিনেমা হিসাবে নির্বাচন এই প্রথম। সিনেমাটির কাহিনি এবং অ্যানিমেশন, দুই বিভাগেই সেরার স্বীকৃতি দিয়েছে সংস্থা। বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে মাসিক ও বার্ষিক চলচ্চিত্র প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আসছে কান বিশ্ব চলচ্চিত্র উৎসব। অবশ্য এর সঙ্গে বিখ্যাত কান চলচ্চিত্র উৎসবের কোনো সম্পর্ক নেই। সংস্থার মাসিক প্রতিযোগিতায় প্রতিবারই একটি করে বিশেষ ঘরানার চলচ্চিত্রকেই স্বীকৃতি দেওয়া হয়। গত আগস্ট মাসের বিষয় ছিল অ্যানিমেশন সিনেমা।
দেশবিদেশের নানা সিনেমার সঙ্গেই প্রতিযোগিতার দৌড়ে ছিল ২০১৯ সালের তৈরি এই সিনেমাটিও। সিনেমাটি নিয়ে প্রথম থেকেই আশাবাদী ছিলেন পরিচালক সিহাবউদ্দিন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যে সেটিই সেরা নির্বাচিত হবে, এমনটা আশা করেননি তিনিও। ‘টুমরো’ সিনেমার এই পুরস্কারপ্রাপ্তি বাংলাদেশের বিনোদন জগতকে অনেকটাই আলো দেখাবে বলে বিশ্বাসী তিনি। তাছাড়া, এখনও উপমহাদেশে অ্যানিমেশন সিনেমা নিয়ে খুবই কম কাজ হয়। এই সাফল্য সেই উদ্যোগকেও আরও পুষ্ট করবে, এই বিষয়ে আশা রাখা যেতেই পারে।
Powered by Froala Editor