কলেরা, টাইফয়েড এবং ডায়রিয়া - আজো গোটা দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে এই তিন রোগের প্রকোপ কমেনি সেভাবে। এর মধ্যেই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন কেউ কেউ। তাঁদের মধ্যেই প্রথম সারির একজন বাংলাদেশের বিজ্ঞানী ফিরদৌসী কাদরী। আজীবন বিজ্ঞানসাধনায় ব্রতী থাকা এবং সাধারণ মানুষের পাশে থাকার স্বীকৃতি হিসাবে এবার তিনি পেতে চলেছেন র্যা মন ম্যাগসাসে পুরস্কার। মঙ্গলবার দুপুরে ফিলিপাইন থেকে ঘোষণা করা হয়েছে এই বছরের পুরস্কার প্রাপকদের নাম। আর তার মধ্যেই রয়েছে ফিরদৌসীর নামও। এশিয়ার নোবেল নামে পরিচিত ম্যাগসাসে পুরস্কার।
বাংলাদেশে অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়ারিয়াল ডিজিজ রিসার্চ-এর ইমিউনোলজি বিভাগের প্রধান ফিরদৌসী কাদরী। ১৯৭৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতোকত্তরের পর উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি পাড়ি দিয়েছিলেন লিভারপুলে। সেখান থেকে পিএইচডি অর্জন করে আবার ফিরে আসেন বাংলাদেশে আইসিডিডিআর-এ পোস্ট ডক্টরাল গবেষণা, পরে সেখানেই স্থায়ীভাবে যোগ দেন তিনি। ক্রমশ সংস্থার প্রথম সারির বিজ্ঞানী হিসাবে স্বীকৃতি পান ফিরদৌসী। তাঁর গবেষণার বিষয় অন্ত্রের নানা রোগ, বিশেষত রোগ প্রতিরোধের পদ্ধতি। এই বিষয়ে তাঁর গবেষণা আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃত। তিনি কলেরার জন্য প্রচলিত বহুমূল্য ডকোরাল প্রতিষেধকটির বিকল্প হিসাবে আবিষ্কার করেছেন শানকল নামের আরেকটি প্রতিষেধক। এই প্রতিষেধকটিই রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের বহু মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে যেমন বহুবার সম্মানিত হয়েছেন ফিরদৌসী, তেমনই পেয়েছেন বহু আন্তর্জাতিক পুরস্কারও। পেয়েছেন ক্রিস্টফ মেরিএউক্স পুরস্কার, সিএন রাও পুরস্কার। এছাড়া গতবছরই পেয়েছেন ‘লরিয়েল-ইউনেস্কো ওম্যান ইন সায়েন্স পুরস্কার’। এবছর ম্যাগসাসে পুরস্কার তাঁর জয়ের মুকুটে আরেকটি পালক যোগ করল। আগামীদিনেও একইভাবে সাধারণ মানুষের কল্যাণের জন্য বিজ্ঞানসাধনায় ব্রতী থাকবেন বলে জানিয়েছেন ফিরদৌসী কাদরী।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
মাদুরশিল্পের হাত ধরেই জাতীয় পুরস্কারজয়ী পশ্চিম মেদিনীপুরের দুই মহিলা